
মোরেলগঞ্জে মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে হ-য-ব-র-ল অবস্থা,ঘুষ না দিলে আটকে বেতন, চাকরিচ্যুত দুই কর্মচারী
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,সুন্দরবন
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট হ-য-ব-র-ল অবস্থা। দীর্ঘ ২০বছর একই কর্মস্থলে থাকায় অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে স্টোর কিপার টিএম আমিনুল ইসলাম। এ ঘটনায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে মহা পরিচালক ও যুগ্ম-সচিব বরাবরে নিরাপত্তাপ্রহরী লোকমান হাওলাদার, ফিসারিকর্মী সোহাগ মোল্লাসহ প্রতিষ্ঠানের ৭ কর্মচারী লিখিতভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাগেছে, মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের আউট সোর্সিং-এর নিয়োগ প্রাপ্ত ৯ জন কর্মচারীর নিয়োগ প্রদানকারি প্রতিষ্ঠান গফফার সিকিউরিটির লাইসেন্স জালিয়াতির দুর্নীতির কারনে আদালতে একটি মামলা চলমান থাকায় উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপ্রাপ্ত ৯ কর্মচারী দীর্ঘ ২ বছর তাদের বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছে এ কর্মচারীদের পরিবার।
এক আদেশে বিজ্ঞ আদালত বাদি পক্ষের উক্ত কর্মচারীদের এ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উক্ত প্রতিষ্ঠানে আউটসোসিং-এর নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের অন্যত্র বদলী ও চাকুরি হতে অব্যাহতি প্রদান করা যাবে না।
পরবর্তীতে উক্ত মামলা নিষ্পত্তি হলে অর্থ মন্ত্রনালয় ও মহিলা বিষয়ক অধিপ্তর কর্তৃক কর্মচারীদের উক্ত বেতনের অনুমোদন দেওয়া হলেও ছাড়পত্র প্রদানের পূর্বেই ওই প্রতিষ্ঠানের অফিসার ইনর্চাজ মোহা. মোখলেসুর রহমান অন্যত্র বদলী হয়ে যায়। বর্তমানে অফিসার ইনর্চাজ (অ.দ) দায়িত্বে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহেলা পারভীন দায়িত্ব পেয়ে কর্মচারীদের বকেয়া বেতনের প্রয়োজনীয় নথিপত্র মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে প্রেরণ করেন এবং কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের রাজস্ব কর্মচারি স্টোর কিপার টিএম আমিনুল ইসলামের সাথে তাদেরকে কর্মকর্তা যোগাযোগ করতে বলেন। সেই সুবাধে আমিনুল ইসলাম কাগজপত্র ও প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য উক্ত ৭ কর্মচারির নিকট এক লক্ষ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। টাকা না দিতে পারায় তাদের জুলাই-২০২৪ হতে ফেব্রæয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ৮ মাসের অনুমোদিত কর্মচারীদের বকেয়া বেতন কর্মকর্তা স্বাক্ষর না করায় জুন ক্লোজিং উক্ত টাকা ফেরত যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করা হলে নিরাপত্তাপ্রহরী লোকমান হাওলাদার, ফিসারী কর্মী সোহাগ মোল্লাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
এ দিকে বেতন না পেয়ে নিরাপত্তাপ্রহরী লোকমান হাওলাদার, ফিসারী কর্মী সোহাগ মোল্লা, ক্লিনার জিয়াউর হাওলাদার, আয়া হফিজা আক্তার, বার্বুচি মিনারা বেগম, ইলেকট্রিশিয়ান মনিরুজ্জামান, মালি মহিদুল ইসলাম এ ৭ কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শুরু থেকেই স্টোর কিপার টিএম আমিনুল ইসলাম ২২ বছর একই কর্মস্থলে থেকে অফিসারদের ম্যানেজ করে অনিয়ম ও দুর্ণীতি করছে। জিম্মি করে ফেলেছে কর্মকর্তাদের। তার দাবিকৃত এক লাখ টাকা না দিতে পারায় ৮ মাসের বেতন হয়েছিলো তাও ফেরৎ চলে গেছে। এখন ছেলে মেয়ে পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। স্কুলের বেতন, প্রাইভেট শিক্ষকের টাকা না দেওয়ায় খেলাপড়া বন্ধ হয়ে পড়েছে। লোকমান হাওলাদার ও সোহাগ মোল্লার চাকুরি ফেরতসহ সকল কর্মচারীর বকেয়া বেতনসহ স্টোর কিপার আমিনুল ইসলামের তদন্ত পূর্বক বিচারের দাবি জানান।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার তুলাতলা নামক স্থানে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের তত্বাবধানে এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ২০০১ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন হলেও এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালে। প্রতি বছর এ মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে সার্টিফিকেট ইন-বিউটিফিকেশন, কম্পিউটার অফিস এ্যাপ্লিকেশন, ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং ও আধুনিক গার্মেন্টস ৪টি ট্রেডে বেকার নারীদেরকে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
স্টোর কিপার টিএম আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ সাল থেকে এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কারও কাছে টাকা চাইনি। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (অ.দ) কর্মকর্তা সাহেলা পারভীন বলেন, তিনি ২ মাস হয়েছে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন এ প্রতিষ্ঠানে। দীর্ঘদিনের নানা বিধ সমস্যা সমাধের একটু সময় লাগছে। বিগতদিনের সকল অনিয়মের বিষয়গুলোর উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করছেন।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?