সাভার সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষকে অব্যাহতি
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
বৈশম্যবিরোধী ছাত্র সংস্করন আন্দোলনে সাভার মডেল কলেজের বুধবার ও বৃহস্পতিবার ছাত্রদের দাবীর মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী হোসেন এর পদত্যাগে ফলে পূণরায় পূর্ণবহাল হলেন অধ্যক্ষ তৌহিদুল ইসলাম।
প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ তৌহিদুল ইসলাম দ্বায়িত্ব পালনকালে শিক্ষারমান ভালো ছিল, দুদিনের সংস্করন আন্দোলনে পূনরায় পদটি তিনি ফিরে পান।
তিনি স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগের শাসন আমলে রাজনৈতিক মামলায় হেনস্থা হলে বারবার অধক্ষের পদটিতে আসন হয় বিগত কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংস্করন আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্রবল আন্দোলনের মুখে সাভার সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ ড. দিল আফরোজা শামীম হেনাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সাভার সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের তিন ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
সাভার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ ইমরুল হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ৯ দপ্তরে পাঠানো এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। আদেশের একটি কপি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
অব্যাহতির আদেশের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়েছেন মর্মে ঘোষণাও দেন অধ্যক্ষ। এ সময় শিক্ষক পরিষদ, বিভাগীয় প্রধানগণসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পরাজিত স্বৈরাচার সরকারের অন্যতম সহযোগী এবং সাভার সরকারি কলেজের অবৈধ উপাধ্যক্ষ উল্লেখ করে ড. দিল আফরোজা শামীম হেনার অপসারণ ও অবিলম্বে পদত্যাগসহ ১৮ দফা দাবি পেশ করে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ড. দিল আফরোজা শামীম হেনা পহেলা নভেম্বর ১৯৯৫ সালে প্রভাষক হিসেবে সাভার সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন।
২০১৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান মঞ্জুরুল আলম খান তপনকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্তার পর সাময়িক বরখাস্ত করিয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব বাগিয়ে নেন। এরপর পালাক্রমে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ২০১৭ সালে সরকার দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুনরায় জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন ড. দিল আফরোজা শামীম হেনা।
তিনি সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লার স্ত্রী। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে সবার মুখ বন্ধ করে রাখেন অব্যাহতি প্রাপ্ত এই উপাধ্যক্ষ। তার বিরুদ্ধে স্বৈরতান্ত্রিক ভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ড. দিল আফরোজা শামীম হেনার অব্যাহতির পর কলেজে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।