
শ্রীমঙ্গলে বোরো ধানে পোকার আক্রমণ কৃষকের স্বপ্ন পুড়ে ছাই!!
শ্রীমঙ্গল(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি
মৌলভীবাজোরের শ্রীমঙ্গলে চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকের স্বপ্ন চোখের সামনে পোকার আক্রমনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে,ধানক্ষেতে শীষ পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। প্রতিকারে
বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও ঠেকানো যাচ্ছে না পোকার আক্রমণ। সবুজ ক্ষেত এখন প্রায় সাদা হয়ে গেছে। বোরো ধানের ক্ষেতে ছড়ি থেকে সবে মাত্র ধানের শীষগুলো বের হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে ওই বের হওয়া ছড়িতে ধানের শীষে সাদা লম্বা লেদা পোকার মতো এক ধরনেরপোকা ওই ধানের শীষগুলো ছিদ্র করে ফেলছে। ফলে ওই ছরিতে আর ধান না হয়ে শুকিয়ে সাদা (চিটা) হয়ে যাচ্ছে। ওই পোকার আক্রমণ থেকে কৃষকের কষ্টের চলতি বোরো ধান রক্ষায় বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও পোকার আক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না।রবিবার(২৭এপ্রিল) সকালে সরেজমিন উপজেলার
আশীদ্রোন,খোশবাস,টিকরিয়া,জামসী,ভূনবীর,লইয়াকুলসহ বিভিন্ন গ্রামে মাঠ ঘুরে গেছে,কৃষকদের বোরো ধানের ক্ষেতে হঠাৎ করে শীষ(লেদা)পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকার আক্রমণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন অধিকাংশ কৃষক।এতে প্রতি বিঘা জমিতে অন্তত সাত থেকে আট মণ করে ধান কম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে ১১ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সেখানে ১১ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হয়েছে। সম্ভব্য উৎপাদন ধানে
৪৭হাজার ২শত ৮১ মেট্রিক টন।উপজেলার আশীদ্রোন খোশবাশ এলাকার কৃষক আমিন মিয়া বলেন, এ বছর বোরো ধানের বীজ খুবই ভালো হয়েছে।ধানের চারা রোপনের পর খুব জমিতে ধানের চারা
ভালো হয়েছে।কিন্তু সাদা লেদা পোকা ক্ষেতে আক্রমণ করে ধানের শীষ কেটে দিয়েছে।উপজেলার আশীদ্রোন খোশবাশ এলাকার কৃষক মো: শাকির আহম্মেদ বলেন, আমার
জমির বোরো ধান সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না।শীষ(লেদা)পোকায় আমার সাড়ে ছয় কিয়ার জমির ধান কেটে পেলেছে। জমির ধান শুকিয়ে সাদা (চিটা) হয়ে গেছে। আমার ২১০একর (সাত কিয়ার) বীজ বপনসহ ধানের জমিতে লাগানো পর্যন্ত ৫২হাজার টাকা খরছ হয়েছে। জমি ধান এখন
শুকিয়ে সাদা (চিটা) হওয়ায় ধান আর কাটা যাবে না।উপজেলার লইয়ারকুল গ্রামের কৃষক বাহার আলী বলেন, আমি চার কিয়ার জমি ক্ষেত
করি, এখন আমার জমির ধানের শীষ পোকায় কেটে পেলে। জমির ধান সাদা হয়ে (চিটা) হয়েগেছে। কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না।উপজেলা কৃষি স¤প্রাসারণ কর্মকর্তা উজ্জল সূত্রধর বলেন, এবছর ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া জনিত কারণে মাজরা ও শীষ কাটা পোকায় তে কীটনাশক ব্যবহার করে পোকা দমন করার পরার্মশ দিচ্ছি। এছাড়া
জমিতে পানি রাখার পরার্মশও দেয়া হচ্ছে। জমিতে পানি থাকলে এ পোকার আক্রমণ ঠেকানো যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার আলাউদ্দিন বলেন, চলতি বছরে উপজেলায় ১১ হাজার ৮শ ৫০হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে।এবছর ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের
মাঠকর্মীরা কৃষকদের সরেজমিন পরামর্শ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া জনিত কারণে কিছু কিছু জায়গায় এবার ধানে মাজড়া ও শীষ
কাটা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।