
রাজনৈতিক বিভাজন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা: ঢাবি উপাচার্য
ডিউ কোর্সপোন্ডেড
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, আমাদের দেশে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিভাজন রয়েছে। এই বিভাজন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। তবে পরিবেশ আন্দোলন রাজনৈতিক বিভাজনের উর্ধ্বে। দল-মত নির্বিশেষে সবাই এই আন্দোলনটিকে ধারণ করেন। পরিবেশকে রক্ষায় এটি একটি বড় সুযোগ। সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করলে এক্ষেত্রে আমরা দ্রুত সফল হতে পারবো।
আজ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘উন্নয়নের স্বার্থে পরিচ্ছন্ন সবুজ ক্যাম্পাস’ কর্মসূচির সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ইউনিডো, ঢাকাস্থ নরওয়ে দূতাবাস এবং প্রাণ আরএফএল গ্রুপের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নরওয়ে দূতাবাসের সচিব মিস ম্যারিওন রাহবি কোলাভেলরাদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি ড. মো. কামরুজ্জামান, ইউনিডো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ড. জাকি উজ জামান, প্রাণ-আরএফএলের পরিচালক চৌধুরী কামরুজ্জামান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডা. আলিম চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট ডা. আফিয়া শাহরিয়াজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইনঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলেয়া বেগম। সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. রিদওয়ানুল হক।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আরও বলেন, পরিবেশ আন্দোলনে কোনো প্রতিযোগী নেই। এখানে সবাই সহযোগী। আজকের এই আয়োজনটিতে সরকার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বুয়েট, জাতিসংঘ, নরওয়ে দূতাবাস সবাই অংশগ্রহণ করেছে। আমরা এই পার্টনারশিপকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই। আশা করছি আমাদের মধ্যে যে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে সেটি অক্ষুণ্ন থাকবে।
আমরা অনেক বেশি কাজ করছি, এসব রাজনৈতিক বাকোয়াজ করছি না উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, অনেক রক্তের ওপর আমরা দাঁড়িয়ে আছি। সে কথা স্মরণ রাখতে হবে। আমরা কাজগুলো করার চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়ু দূষণ রোধে পাতা পোড়ানো বন্ধ করার জন্য অফিসিয়ালি নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়টি নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আমরা ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত’ ক্যাম্পাস করতে চাই। আমি এখনই এর ঘোষণা দিবো না। আগে কাজ এগিয়ে নেবো তারপর ঘোষণা দিবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে আতশবাজির ব্যবহারও প্রায় শূণ্যের কোঠায় নিয়ে আসা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন উপাচার্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে আমাদের অভ্যস্ত হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমরা ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত’ ঘোষণা করতে চাই। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি আমাদের হর্ণমুক্ত ক্যাম্পাসও গড়ে তুলতে হবে। সদিচ্ছা ও সচেতনতা থাকলে এ কাজগুলো করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।