ডার্ক মোড
Saturday, 19 April 2025
ePaper   
Logo
মুন্সীগঞ্জে পাখি পর্যবেক্ষন সন্মেলণে বনভূমি রক্ষা ও বাড়ানোর তাগিদ ৭৪২ প্রজাতির পাখির বিচরণ, বিলুপ্ত

মুন্সীগঞ্জে পাখি পর্যবেক্ষন সন্মেলণে বনভূমি রক্ষা ও বাড়ানোর তাগিদ ৭৪২ প্রজাতির পাখির বিচরণ, বিলুপ্ত

মুন্সীগঞ্জ (দক্ষিণ) প্রতিনিধি ॥ 

মন্সীগঞ্জে জাতীয় পাখি পর্যবেক্ষক সম্মেলনে বনভূমি রক্ষা ও বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন আয়োজকরা। গত শনিবার দুপুরে শহরের সরদার পাড়ার ‘নিসর্গ অঙ্গণে’ পাখি রক্ষার এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক আহমেদ। দিনব্যাপী এই সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেয়। আসেন গবেষক ও শিক্ষার্থীরা। এতে তারা তুলে ধরেন নানা রকমের পাখির কোলাহল। অনেক সুপরিচিত পাখি এখন আর দেখাই যায় না। এতে হুমকিতে পড়েছে উদ্ভিদের পরাগায়ন। বাসযোগ্য পৃথিবী ধরে রাখতে তাই পাখির আবাসস্থল সুরক্ষা জরুরি। বার্ড বাংলােেশর সভাপতি সাজাহান সরদারের সভাপতিত্বে সন্মেলনে আরও অংশ নেন মন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার সামসুল আলম সরকার, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোল্লাহ রেজাউল করিম, পাখি বিশেষজ্ঞ ও সিলেটের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন খান পাঠান, পরিবেশ আন্দোলনকর্মী শাহজাহান মৃধা বেনু, সাংবাদিক সেলিম সামা, মুন্সীগঞ্জ বাপার সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, ‘দৈনিক সভ্যতার আলো’র স¤পাদক মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল এবং পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রুবেল সরদার। তারা বলেন, নদীনালা, খাল-বিল, হাওর, সুন্দরবন, পাহাড়, সমুদ্র, অনন্য সাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাংলাদেশে পাখির বিচরণ। কিন্তু মুনষ্য সৃষ্টি নানা চ্যালেঞ্জে বনে ময়ূর নেই। শকুনসহ অনেক প্রজাতির পাখি ৬৫ ফুটের নিচে কোনো স্থানে বাসা বাধে না। উচু গাছ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। তাই উঁচতে থাকা পাখির আবাসস্থল সংকট। খাল-দূষন আর ভরাটে অনেক নদী, খাল বিলও এখন চ্যােেঞ্জর মুখে। এক সময় অতিথি পাখির অভয়ারণ্য পদ্মা, মেঘনা ও ধলেশ্বরী নদীর অববাহিকা মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুরে অবৈধ শিকারীদের দাপটে এখন পাখি দেখা যায়না। জীববৈচিত্রের ভারসাম্য রক্ষায় বনভূমি বৃদ্ধির পাশাপাশি এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তোলেন সবাই। সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অংশ নেওয়া পাখিপ্রেমীরা পরিবেশ বান্ধব হয়ে পাখির আবাসস্থল বাঁচিয়ে রাখার আওয়াজ তৃণমূলে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোল্লাহ রেজাউল করিম বলেন, ‘দেশে কয়েক কোটি পাখির আবাসস্থল। অন্তত ৭৪২ প্রজাতির পাখির বিচরণ রয়েছে। এর মধ্যে ৩১ প্রজাতির পাখির বিলুপ্তি ঘটেছে।’ “সেই প্রজাতিগুলো ফেরানোসহ বিলুপ্তি ঠেকাতে পাখি তথা প্রকৃতির সঙ্গে মমত্ব বৃদ্ধিতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। মানুষের স্বার্থেই পাখি ও প্রকৃতি সুরক্ষা এখন সময়ের দাবি। এ ছাড়া বন্ধ করতে হবে অপরিকল্পিত নগরায়ণ।”

পাখি বিশেষজ্ঞ সাজাহান সরদার বলেন, প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট কারণে দিন দিন পাখিদের আবাস স্থল ধ্বংস হচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন পর্যায়ে পাখি ও প্রকৃতি নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে সাত শতাধিক প্রজাতির পাখি রযেছে এই বিশে^। কিন্ত দিন দিন তার সংখ্যাও কমছে। “এখন কমছে পাখির প্রজাতির সংখ্যাও। আজ থেকে ৩০ থেকে ৪০ বছর আগে যে পাখিগুলো দেখেছি, সে পাখি এখন আর দেখা যাচ্ছেনা। আবার অনেক পাখি দেখা যাচ্ছে, যেগুলো আগে দেখিনি। আবাসন সংকুচিত ও পরিবর্তিত হওয়ায় পাখির সংখ্যা এমশই কমে যাচ্ছে। “গ্রামীণ ঝোপ-জঙ্গল কমছে। দেশী পাখির বড় আবাসন হচ্ছে ঝোপ-জঙ্গল গ্রামীন জলাশয়। শহর কেন্দ্রিক পাখির আবাসন একেবারে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর এতে পাখির ভুবন ছোট হচ্ছে। সচেতনতা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সঠিক পরিকল্পনা করে এই জীববৈচিত্র ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করেন এই পাখি বিশেষজ্ঞ।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন