মব জাস্টিস কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয় : ফলকার টুর্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বলেছেন, মব জাস্টিস কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রতিটি অপরাধের তদন্ত করতে হবে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেল এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পর বাংলাদেশের অনেক স্থানে মব জাস্টিস হয়েছে। এ বিষয়ে মানবাধিকার হাইকমিশনার বক্তব্য জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রতিটি অপরাধের তদন্ত করতে হবে।
আন্দোলনে পুলিশ মারার ঘটনায় দায়মুক্তির বিষয়ে টুর্ক বলেন, কোনো হত্যার দায়মুক্তি দেওয়া উচিত নয়। প্রতিটি হত্যার তদন্ত ও বিচার করতে হবে। না হলে মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
ঢালাওভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে টুর্ক বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছাড়া কোনও মামলা করা যায় না। এটি সুরাহা করা অত্যন্ত জরুরি। এই বিষয়ে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। আগে যা করা হতো সেটির পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে কেবল আওয়ামী লীগের সদস্য বা সমর্থকসহ তাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার ভিত্তিতে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয় না।
ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে হাইকমিশনার বলেন, সন্ত্রাস আইন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এর ফলাফল কী হতে পারে, সেটি আমরা দেখেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা ভিন্নমত পোষণকারী বা রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, তাদের সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক হত্যাসহ বেশকিছু সহিংসতার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মামলা দায়ের বা আইনি প্রক্রিয়া মানা হয়নি, যা উদ্বেগজনক। মনে রাখতে হবে যে অতীতের মত অন্যায় পুনর্বাসন করা যাবে না। সকলেরসঙ্গে আলোচনায় আমি এই নিশ্চয়তা দিয়েছি যে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে ঘিরে অনেক পুলিশ সদস্য নিহত হন। কিন্তু পুলিশ হত্যার বিষয়ে কোনো মামলা দায়ের হয়নি। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কী পুলিশ হত্যার ঘটনার তদন্ত প্রয়োজন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল হত্যার তদন্ত এবং বিচার হওয়া প্রয়োজন।
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের কার্যালয় খোলার বিষয়ে টুর্ক বলেন, আমার ইচ্ছা প্রতিটি দেশে অফিস খোলা। কিন্তু অর্থসংকটের কারণে এটি সম্ভব নয়। সেজন্য আমরা অগ্রাধিকার দেই কোথায় এটির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
দুই দিনের সফরে সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক।
সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকা ছেড়ে যাবেন ফলকার।