ডার্ক মোড
Friday, 01 November 2024
ePaper   
Logo
বিশ্বনাথে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে উধাও প্রতারক চক্র

বিশ্বনাথে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে উধাও প্রতারক চক্র

সিলেট ব্যুরো

সিলেটের বিশ্বনাথে মাত্র ‘১ হাজার ৫০ টাকা’ দিয়ে সদস্য হলেই মিলবে লক্ষাধিকের উপরে লোন, পরিশোধ করতে পারবেন ২ বছরে মাসিক কিস্তিতে। আবার লোন নেওয়ার সময় লক্ষ টাকায় সঞ্চয় হিসেবে জমা দিতে হবে আরোও ৬ হাজার টাকা। এমন প্রলোভন দিয়ে ‘উপজেলা ও পৌর’ এলাকার কয়েক শতাধিক জনসাধারণের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে ‘রাইজ এসসেট ডেভেলপমেন্ট’র ব্যানারে পৌর শহরের চান্দশিরকাপন এলাকার আনোয়ার খানের ভাড়াটিয়া বাসায় অফিস খোলা প্রতারক চক্র।

ওই ভ‚য়া এনজিও থেকে লোন নিতে কেউ কেউ নিজের ঘরের গৃহপালিত গরু বিক্রি করে কিংবা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে ছেলের জমানো টাকা প্রতারক চক্রের কাছে জমা দিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ‘রাইজ এসসেট ডেভেলপমেন্ট’র নামের প্রতারক চক্রের পালিয়ে যাওয়া খবর পেয়ে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় তাদের কার্যালয়ে ছুটে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ‘উপজেলা ও পৌর’ এলাকা থেকে আসা অনেক ভ‚ক্তভোগী লোনের টাকা নিতে এসে জড়ো হয়েছেন, কিন্তু অফিসতো রয়েছে তালা দেওয়া। এমনকি প্রতারক চক্রটি কাজের বুয়ার টাকাটাও নিয়ে পালিয়েছে। ওই রাতে একপর্যায়ে লোন নিতে আসা লোকজন অসহায় হয়ে ফিরতে শুরু করেছেন নিজেদের বাড়িতে।

ভুক্তভোগীরা জানান, মাত্র ৯ দিন পূর্বে পৌর শহরের চান্দশিরকাপন এলাকার আনোয়ার খানের ভাড়াটিয়া ওই বাসা ‘রাইজ এসসেট ডেভেলপমেন্ট’ নামের একটি এনজিও সংস্থা ভাড়া নেয়। তাদের সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে রেজিস্ট্রেশন নং এস ১২৪২/সি ৯২১৮৯/২২/সি ৭৮৪২৪/৫২। শাখা অফিস কোড ১২২। আর তাদের হেড অফিস হচ্ছে সিটি সেন্ট্রারের উত্তর পাশে রাইজ নিজম্ব ভবন দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল ঢাকা-১২২৩। এই চক্রটি মাত্র ৯ দিনেই কয়েক শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর ৯ দিন পূর্বে বিশ্বনাথে শাখা অফিসের কার্যক্রম শুরু করলেও সাধারণ মানুষকে তারা বলেছে প্রায় ৩ মাস ধরে বিশ্বনাথে তাদের কার্যক্রম চলছে।

তাদের প্রতারণার শিকার হওয়া উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তবলপুর গ্রামের প্রবাসী আরশ আলীর স্ত্রী হুছনা বেগম জানান, ৬/৭দিন পূর্বে এই চক্রের কয়েকজন সদস্য কেন্দ্র বানাতে তার বাড়িতে যান। এসময় ঋন গ্রহিতা হিসেবে তিনি ৭ জনের একটি গ্রুপও তৈরি করেন। ওই ৭জনের কাছ থেকে প্রথমে ভর্তি ফি হিসেবে ১ হাজার ৫০টাকা নেয়া হয়। এছাড়াও তাকে ৭ লাখ টাকা ঋন দেয়ার কথা বলে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) সঞ্চয় হিসেবে তার কাছ থেকে নগদ আরোও ৪০ হাজার টাকা জমা রাখে।

কিন্তু বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) টাকা আনতে গিয়ে দেখতে পান অফিসে তালা দিয়ে প্রতারক চক্র পালিয়েছে। একইভাবে একই গ্রামের বৃদ্ধা ছায়ারুণ বেগমের ১১হাজার টাকাও হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

ওই বাসার পার্শ্ববর্তি কলোনীর বাসিন্দা হকার ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন বলেন, তার ৭জনের গ্রুপের কাছ থেকে ভর্তি ফি হিসেবে ১ হাজার ৫০ টাকা করে নিয়েছে চক্রটি। এভাবে গ্রুপ করে বিভিন্ন এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে প্রতারক চক্রটি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। খোঁজ খবর নিয়ে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন