ডার্ক মোড
Friday, 01 November 2024
ePaper   
Logo
নবাবগঞ্জে দ্বৈত নাগরিককে হত্যার পর মাটিচাপা, পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন

নবাবগঞ্জে দ্বৈত নাগরিককে হত্যার পর মাটিচাপা, পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার দ্বৈত নাগরিক (বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ান) রেহানা পারভিন (৩৭) কে অপহরণ, হত্যা ও গুমের পর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ।

এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের পাতিলঝাপ গ্রামের মৃত জহুর উদ্দিনের ছেলে আমজাদ হোসেন ও একই উপজেলার বক্সনগর ইউনিয়নের ছোট রাজপাড়া গ্রামের মৃত. আব্দুল মান্নানের মেয়ে পাপিয়া আক্তারকে গ্রেফতার করেছে বলে জানান।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টায় ঢাকার নবাবগঞ্জ থানা সভা কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

পুলিশ সুপার লিখিত বক্তব্যে জানান, গত ৩১ আগষ্ট উপজেলার পাতিলঝাপ গ্রামের লেহাজ উদ্দিনের স্ত্রী আইরিন আক্তার(৬২) নবাবগঞ্জ থানায় একটি ডায়েরি করেন। জিডি নং ১০৫০ উল্লেখ করেন, তার মেয়ে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক রেহানা পারভিনকে দুই মাস যাবত নিখোঁজ রয়েছে।

অপরদিকে একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ ও হাই কমিশন ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেহানা পারভিনের অবস্থান সনাক্তে বাংলাদেশ পুলিশের সহায়তা চান।

এঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর ভিকটিম রেহানা পারভিনের মা আইরিন আক্তার বাদী হয়ে মেয়ে রেহানা পারভিনের স্বামী আওলাদ হোসেন (৪৭), ননদ পাপিয়া আক্তার (৩৬), ননদ মাকসুদা বেগম (৪৪), ননদের স্বামী আমজাদ হোসেন (৬৪)’র নাম সহ অজ্ঞাতদের আসামী করে নবাবগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলা নং ৫, তদন্তে দোহার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম সরাসরি পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় অভিযান চালিয়ে আসামী আমজাদ হোসেন ও পাপিয়া আক্তারকে গ্রেফতার করে। পরে আসামীদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।

পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানার নয়ারহাট মৌনদিয়া চৌরাপাড়াস্থ পাপিয়া আক্তারের বাড়ির আঙ্গিনায় সেফটি ট্যাংকের পাশে মাটি খুঁড়ে রেহানা পারভিনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।

এএসপি আশরাফুল আলম আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় মৃত. রেহেনা পারভিন ও তার স্বামী বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিক। ভিকটিম প্রায় ২০ বছর আগে উপজেলার ছোট রাজপাড়া গ্রামের মৃত. আ. মান্নানের ছেলে আওলাদ হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছিলেন। তাদের ঘরে তিন ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। অস্ট্রেলিয়ায় থাকাকালীন তাদের দাম্পত্য কলহ প্রায় লেগে থাকতো। ভিকটিম বাংলাদেশে নিজ নামে জমি ক্রয় ও বাড়ি নির্মান নিয়ে স্বামীর সাথে বিরোধ চরমে ওঠে।

সর্বশেষ ২৯ জুন বাংলাদেশে আসেন ভিকটিমের স্বামী। পরে ৩ জুলাই আসামীদের পূর্ব পরিকল্পনায় ভিকটিমকে নবাবগঞ্জ থেকে অপহরণ করে পাপিয়া আক্তারের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিমকে খুন করে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে বাড়ির উঠানের মাটির নিচে পুঁতে রাখে। পরে ভিকটিমের স্বামী ১৩ জুলাই পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যায়।

থানা পুলিশ, এঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করাসহ মৃতদেহ উদ্ধার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করেছেন। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া হাই কমিশন ও অস্ট্রেলিয়া ফেডারেল পুলিশ হেডকোয়াটার্সে ভিকটিমের তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান এএসপি আশরাফুল আলম।

সংবাদ সম্মেলনে, আরও উপস্থিত ছিলেন নবাবগঞ্জ থানার বিদায়ী ওসি মো. শাহ্ জালাল, নবাগত ওসি আব্দুল মমিন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন