দোহারে ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে সভা
দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
দোহারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে ছাত্র-জনতার উপর উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিগনের একজোটে হামলার ঘটনার বিচার দাবী জানিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনায় সভা।এ সময়ে ছাত্র আন্দোলনের সমন্নয়ক কমিটির ছাত্ররা বিচারের দাবীতে মিছিল ও বিক্ষোভ করেন।
মঙ্গলবার(১৩ আগষ্ট) দুপুর ১টায় দোহার উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে ও পৌর সভা কার্যালয়ে ছাত্র সমন্নয়ক কমিটির নেতা মো.রাসেলের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীরা হামলার বিচারের দাবীতে মিছিল ও বিক্ষোভ করেন।পরে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে চাইলে উপজেলা সভাকক্ষে ঘন্টাব্যাপী আলোচনা চলে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা মো.জাকির হোসেন তাদের দাবী মানতে সর্বাতœক চেষ্ঠা করবেন বলে আশ^স্ত করেন সাধারন ছাত্রদের।
সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দাবীদার মো.রাসেল জানান, গনঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনকালে গত ৫ আগষ্ট, দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন,পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলমাছ উদ্দিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা দক্ষিন ছাত্রলীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন সোহাগ,পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন সুরুজ,সাধারন-সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মাঝি, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন-সম্পাদক আওলাদ হোসেন মোড়ল,বিলাশপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রাশেদ চোকদার,রাইপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো.আমজাদ হোসেন,সুতারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ নাছির উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলরবৃন্দসহ আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও শতাধিক নেতাকর্মিরা আগ্নেয় অস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সর্জ্জিত হয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
তিনটি পৃথক হামলায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত: মোট ৬৪ আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন। একই ঘটনায় আরও অন্তত: অর্ধশতাধিক দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং লুটপাট করেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা। এক পর্যায়ে গনঅভ্যূত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সংবাদ পেয়ে গাঢাকা দেন আ’লীগ সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান,মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানরা।এতে উপজেলা/পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সকল সেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
আত্মগোপনে চলে যান সকল জনপ্রতিনিধিগন। অনেকের মোবাইল ফোনও পাওয়া যায়। এ ঘটনার বেশ কয়েকদিন পরই আ’লীগের কর্মিবাহিনীরা উপজেলার সাধারন শিক্ষার্থীদেরকে আবারও মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন সাধারন শিক্ষার্থীরা। এসকল ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মো.রাসেল এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার দাবী করেন।
বিচার না পেলে অন্যথায় আবারও রাজপথে থাকবেন বলে হুশিঁয়ারী দেন ছাত্র সমন্নয়কের নেতা রাসেল ও ছাত্ররা। এ সময়ে সকলকে শান্ত করতে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ও এসিল্যান্ড মো.মামুন খান এক সভার আয়োজন করেন উপজেলা সভাকক্ষে। সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সাথে ঘন্টাব্যাপী আলোচনা শেষে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের দাবী মানতে সর্বাত্মক চেষ্ঠা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন সাধারন ছাত্রদের।একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সবাই বাড়ি ফিরে যান।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাকির হোসেন বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের অভিযোগের বিষয়টি খুবই মনোযোগ সহকারে শুনেছি। কিছু বিষয়ে তাদের দাবীদাওয়া বোঝাতে পেরেছি। বাকিগুলো উর্ধত্বন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।