ডার্ক মোড
Tuesday, 13 May 2025
ePaper   
Logo
তীব্র গরমে অতিষ্ঠ রাউজানে জনজীবন-  বৃষ্টির জন্য হাহাকার

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ রাউজানে জনজীবন- বৃষ্টির জন্য হাহাকার

শাহাদাত হোসেন, রাউজান (চট্টগ্রাম)

নেই বৃষ্টির দেখা,প্রচন্ড গরমের তাপে অতিষ্ঠ হয়ে 

পড়েছে রাউজানের জনজীবন।

এখানে প্রতিদিন গড়ে ৩৮ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

সকাল থেকেই শুরু হয় গরম হাওয়া।বেলা গড়ালে একটু একটু করে বাড়তে থাকে সূর্যের তাপ।জনশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামীণ জনপদ।

এই আগুন ঝরা রোদ থেকে বাঁচতে মানুষ ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে। তাতেও নেই একটু স্বস্তির বাতাস।এই প্রচন্ড রোদের তেজে বেশিরভাগ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না।গরমে মানুষ থেকে শুরু করে প্রাণীকুল হাহাকার করছে বৃষ্টির জন্য।

বৃষ্টি না হওয়ায় গরমের তাপমাত্রা সহ্য হচ্ছে না।

একটু প্রশান্তির আশায় গাছের ছায়ার নিচে কিংবা শীতল কোনো ছায়াতলে  আশ্রয় নিচ্ছেন মানুষ। আবার কেউ কেউ গাছের ছায়ার নিচে বসে হাতপাখা ঘোরাচ্ছে।প্রচণ্ড গরমের তাপে গ্রামীণ জনপদ উত্তপ্ত। ফাঁকা রাস্তা ঘাট, বিপর্যস্ত খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

তীব্র গরমের কারণে বন্ধ হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের কাজ। রিকশাচালক, দিনমজুর থেকে শুরু করে দিন আনা দিন খাওয়া প্রতিটি মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।

এই গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। গরমে শিশু-বৃদ্ধদের শরীরের জ্বর, পেট খারাপ, সর্দি, কাশিসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। 

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মতে, গরমে শিশুরা অত্যধিক ঘামে।

এ কারণে শিশুর বুকে ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি, এমনকি নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টও হতে পারে।

এ ছাড়া অত্যধিক ঘামে শিশুর শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। ফলে শিশুর পানিশূন্যতা দেখা দেয়।

তাই শিশু ঘেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার শরীর মুছে দিয়ে কাপড় বদলে দিতে হবে। গরমে শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে।

পরিষ্কার রাখতে হবে শরীর ও পরিবেশ।

এ সময়টায় শিশুকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাওয়ানো দরকার বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

রাউজান জলিলনগর এলাকার রিকশা চালক আনোয়ার বলেন, তীব্র গরমে রাস্তায়  রিক্সার পেট্রল মেরে গাড়ি চালাতে খুব কষ্ট হয়।

গরমে মাথা পুড়ে যাচ্ছে।

দু'তিনটি ভাড়া মারার পর কিছুক্ষণ গাছের ছায়ার নিচে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার চালাই।

সংসারে অনেক খরচ, তাই বসেও থাকতে পারি না। 

হলদিয়া ইউনিয়নের কৃষক আহমদ চ্ছাফা  বলেন,তীব্র গরমে পাকা ধান কাটতে পারছি না।

ধান কাটতে গেলে আগুনের মতো গরমে মাথা পুড়ে যাচ্ছে। তবে কষ্ট হলেও  ঝড়-বৃষ্টির আগে যদি মাঠের পাকা ধান কাটা, মাড়াই ও রোদে শুকি গোলায় তুলতে না পারি, তাহলে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

ফকির হাট কাপড় ব্যবসায়ী সাদিকুজ্জামান শফি জানান,তীব্র গরমে রাস্তাঘাট ফাঁকা। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে মানুষ।দোকানে বেচাকেনাও কম হচ্ছে। সন্ধ্যায় সামান্য বেচাকেনা হয়। পরিদর্শনে দেখা গেছে- প্রচণ্ড গরমের কারণে রাউজান উপজেলার হাট- বাজার গুলোতে বেড়েছে লেবুর শরবত, আনারস,বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি ও ডাবের বিক্রি।হাট-বাজারে বিভিন্ন খোলা জায়গায় লেবুর শরবত, ঠান্ডা পানি ও  ডাবের বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।এই গরমে ক্লান্তি দূর করতে কেউ ডাবের পানি পান করছেন, কেউ খাচ্ছেন লেবুর শরবত আর বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি। তবে অনেকেই গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে মাথায় পানি দিচ্ছি, আবার কেউ কেউ পুকুরের পানিতে শরীর ডুবিয়ে রাখছে। শিশুরাও গরম সহ্য করতে না পারে পুকুর এবং নদী-খালের পানিতে লাফ দিয়ে নিচে পড়ছে। 

জলিলনগর এলাকায় শরবত বিক্রেতা মোহাম্মদ সুজন বলেন, এই গরমে বেড়েছে শরবত বিক্রি।প্রতিদিন দেড়-দুই হাজার টাকা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে। তবে রোদে দাঁড়িয়ে শরবত বিক্রি করতে কষ্ট হয়। কিন্তু উপায় নেই।  এছাড়াও গরমের তীব্রতা বেচাকেনা বেড়েছে চার্জার ফ্যান।অনেকেই ছোট শিশু জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন চার্জার ফ্যান। একটু স্বস্তির জন্য। রোববার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,গরমের তাপমাত্রা যে এত বেশি বাহিরে হাঁটলেই গরম বাতাস অনুভূত হচ্ছে।

এই গরমের পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের অতিষ্ঠ জনগণ। প্রতিদিন নিয়মিত ২-৩ ঘন্টায় লোডশেডিংয়ের ভুগছেন জনগণ।

এই গরমে সবচেয়ে কষ্টে রয়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।

একটু খানি বৃষ্টিপাতের জন্য হাহাকার করছেন মানুষ। বৃষ্টিপাত হলে সূর্যের তাপমাত্রা কমতে পারে বলে জানান পথচারীরা।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন