ডার্ক মোড
Wednesday, 30 April 2025
ePaper   
Logo
সিজেএফবির গোলটেবিল বৈঠক : উপকূলবাসীকে ২৯ এপ্রিলের চাইতেও ভয়াল স্মৃতির মুখোমুখি

সিজেএফবির গোলটেবিল বৈঠক : উপকূলবাসীকে ২৯ এপ্রিলের চাইতেও ভয়াল স্মৃতির মুখোমুখি

নিজ্বস প্রতিবেদক


উপকূলীয় সাংবাদিকদের সংগঠন কোস্টাল জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ এর গোলটেবিল বৈঠকের প্রধান অতিথি ডক্টর মোহাম্মদ জকরিয়া বলেছেন প্যারাবন নিধন করে সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস করলে দেশের উপকূলবাসীকে ২৯ এপ্রিলের চাইতেও ভয়াল স্মৃতির  মুখোমুখি  হতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের তাপমাত্রা শতবছর এর রেকর্ড ব্রেক করে চলেছে। অসহনীয় গরমে আমজনতার জীবন ওষ্ঠাগত । সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় বারবার বলছেন গাছ লাগাতে, প্যারাবন সৃজন করতে। সরকারী আয়োজনে বৃক্ষমেলা করা হয় প্রতিবছর। কোটি কোটি টাকার গাছ লাগানো হয় জনগনের  টাকায়। অথচ সরকার সহ সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে প্যারাবন নিধন করা হচ্ছে অবাধে।

২৯ এপ্রিল ২০২৫, স্মরণে আজ বিকেল ৪.০০ ঘটিকায় বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ  মিলনায়তনে কোস্টাল জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ এর আয়োজনে ও উপকূলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, দ্বীপ শিখার সহ আয়োজনে সিজেএফবির উপদেষ্ঠা সিআইপি আব্দুশ শুক্কুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠক ও দোয়ার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়,
মূল প্রসঙ্গ উপস্থাপক লেখক গবেষক সাহাদাত উল্লাহ খান বলেন, বনবিভাগ ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় মহেশখালীতে হাজার হাজার একর প্যারাবন দিবালেকে কেটেছে কে?  বিগত সরকার, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও বনকর্মকর্তারা কি  কোনভাবেই  এর দায়  এড়াতে পারেন না?
মহেশখালীতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার প্যারাবন নিধন করে চিংড়ী ঘের ও লবন চাষের মাঠ তৈরি করা হচ্ছে। ছাত্র জনতার আন্দোজনে গঠিত সরকারের কাছে জার দাবী বিশেষ ট্রান্সফোর্স গঠন করে পরিবেশ সুরক্ষায় দ্বীপাঞ্চলে প্যারাবন নিধনকারীদের তালিকা প্রকাশ করা। জাতীয় ও গণ-দুশমন, মানবতাবিরোধী অপরাধী কুলাঙ্গারদের কঠোর শাস্তি ও ফাঁসি দেওয়া। প্রয়োজনে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হোক।প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর সাবেক সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ডক্টর মোহাম্মদ জকরিয়া,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  মহেশখালী  কুতুবদিয়ার সাবেক  এমপি ডক্টর  এইচ এম হামিদুর রহমান  আজাদ নিরাপত্তা  বিশ্লেষক, বরেণ্য  শিক্ষাবিদ কর্ণেল অবঃ আশরাফ আল দীন   ও কবি  প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এর যুগ্ম সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) ডক্টর  মো. জিয়াউল ইসলাম মুন্না। তিনি বলেন, ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে হরিলুট করে নিয়ে গেছে। দ্বীপাঞ্চলের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করেনি এখনো তাদের দোসররা বহাল তবিয়তে আছে। বর্তমান সরকার মহেশ খালী, সন্দীপ, ভোলার যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। কুতুবদিয়া বাসীর জন্যও  যোগাযোগ ক্ষেত্রে  শিঘ্রই সু-সংবাদ আসছে।গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কোস্টাল জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ, খান উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন  ডুয়েট  এর উপাচার্য প্রফেসর জয়নাল আবেদীন, মূল প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন লেখক, গবেষক ও রাষ্ট্র চিন্তক সাদাত উল্লাহ খান, প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নিরাপদ সড়ক চাই’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও সিজেএফবি’র উপদেষ্টা লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, কেবিনেট বিভাগের উপসচিব মো. সরওয়ার  কামাল, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির মহাসচিব এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী, যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী, বিশিষ্ট নদী গবেষক ও বিআইডব্লিউটিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম মিশা,দৈনিক  ডেসটিনি  এর ভারপ্রাপ্ত  সম্পাদক  কবি মাহমুদুল হাসান  নিজামী বিআইডব্লিউটিসি এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আলা উদ্দিন, মহেশ খালী সমিতি-ঢাকার সভাপতি মোহাম্মদ আলী, মহেশ খালী সমিতি-ঢাকার সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল ইসলাম,  রাজনীতিবিদ  হামদুল্লাহ আল মেহেদী,  নারীনেত্রী রেহেনা সালাম,  কবি আবদুল্লাহ আল মামুন,কবি ও কথা সাহিত্যিক নাসরিন ইসলাম,  কবি সায়েলা  খান প্রমুখ। আরো বক্তব্য রাখেন উপকূলের স্বজনহারা পরিবারের সদস্যবৃন্দ, ছাত্রনেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ।

গোলটেবিলবৈঠকে বক্তারা দাবী করেন-
* উপকূলীয় মন্ত্রণালয় ও উপকুল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
* উপকূল সুরক্ষায় স্থায়ী সুপার ডাইক বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
* প্যারাবন কেটে চিংড়িঘের ও লবন মাট তৈরী বন্ধ করে ও সবুজ বেষ্টনী সৃজন করতে হবে।
* দ্বীপাঞ্চলের সাথে মূল ভূখন্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করতে হবে।
* পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেন্টার  নির্মাণ করতে হবে।
* ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস ঘোষণা করতে হবে।
(১৯৭০ সালের এই দিনে ১০ লাখ মানুষের প্রাণহানী ঘটে, ইতিহাসের ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগে)

১৯৯১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের উপকুলে আঘাত হানে স্মরণকালের ভয়াবহতম প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। যার আঘাতে মারা যায় প্রায় ৫ লাখ মানুষ। যদিও সরকারি হিসাবে এ সংখ্যা দেড় লাখের মতো। ঘূর্ণিঝড়ের পর এক মাসের মধ্যে এর প্রভাবে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আরো লক্ষাধিক মানুষ। সেদিনের সেই ভয়ঙ্কর তান্ডবে শুধু মানুষই নয়, লক্ষ লক্ষ গবাদী পশু, ফসল, বিপুল পরিমাণ স্থাপনা, সম্পদ ধ্বংস হয়।
 
 

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন