ডার্ক মোড
Saturday, 01 February 2025
ePaper   
Logo
সাতক্ষীরায় মানবাধিকার সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমএসএফ-এর প্রশিক্ষণ

সাতক্ষীরায় মানবাধিকার সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমএসএফ-এর প্রশিক্ষণ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

‘নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ (ডিএইচআরএনএস) প্রকল্পের মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষা করা’ প্রতিপাদ্যে সাতক্ষীরায় জেলা পর্যায়ের মানবাধিকার ও তথ্য অনুসন্ধান দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)-এর সহযোগিতায় জেলা মানবাধিকার ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্কের আয়োজনে ওই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) সাতক্ষীরা জেলা শাখার আহবায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ফরাজী। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী অধ্যক্ষ ড. দিলারা বেগম, মাধব চন্দ্র দত্ত, এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জী, পবিত্র মোহন দাস, মো. আনিসুর রহমান, নারী নেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, এড. নাজমুন নাহার ঝুমুর, এড. রঘুনাথ মন্ডল, এড. মোস্তফা আসাদুজ্জামান দিলু, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ওসিসি কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিক, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, এড. ড. দিলীপ কুমার দেব, আলী নূর খান বাবুল, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, এড. খায়রুল বদিউজ্জামান, সাংবাদিক এসএম শহীদুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান মধু, শেখ আফজাল হোসেন, মোহাম্মদ সাকিবুর রহমান বাবলা, হাসেম আলী, সালাউদ্দীন রানা প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) সাতক্ষীরা জেলা শাখার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মুনির উদ্দিন।

প্রশিক্ষণে সাতক্ষীরায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে আশাশুনির প্রতাপনগরে গোয়ালে গরুর খাবারে তিনটি গরু হত্যা, আশাশুনির শ্রীউলায় সাইকেল মিস্ত্রী অনিমেষ হত্যা, কালিগঞ্জে স্বামীর পরকিয়া নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, দুই সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা ও সদর উপজেলার বালিথায় শিশু ধর্ষণ। এছাড়া জেলায় মানবাধিকার লংঘন নিয়ে আরও বেশ কিছু ঘটনা আলোচনায় উঠে আসে। মানবাধিকার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয় আলোচনা সভায়।

সুন্দরবনে ১৫ জেলের মুক্তিতে জনপ্রতি ৩ লাখ টাকা দাবি ডাকাতদের

দুবলার চর এলাকার বাহির সমুদ্র থেকে অপহৃত ১৫ জেলের প্রত্যেকের মুক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করেছে ডাকাতরা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে দুবলার চর থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন জেলেরা। জেলেদের অপহরণের সময় ডাকাতদের রেখে যাওয়া মোবাইল নাম্বারে সকালে ফোন করার পর তারা এই মুক্তিপণ দাবি করে। প্রতাপনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বর ও চাকলা বেল্টের জেলেদের সভাপতি আব্দুর রউফ জানান, ২৭ জানুয়ারি ভোর রাতে জেলেদের অপহরণের সময় ডাকাতরা যোগাযোগের জন্য যে মোবাইল নাম্বার রেখে যায় সেটি গত চার দিন ধরে বন্ধ থাকলেও শুক্রবার সকালে এটি খোলা পাওয়া যায়। ওই নাম্বারে যোগাযোগ করলে প্রতি জন জেলের মুক্তির বিনিময়ে তিন লাখ টাকা করে দাবি করে তারা। তবে কোন স্থান জানায়নি ডাকাতরা।

এদিকে জেলেদের উদ্ধারে দুবলার চর থেকে সচিবালয়, র‌্যাব, কোস্ট গার্ড, পুলিশসহ বিভিন্ন পক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে কাজ করে যাওয়া প্রতাপনগরের বাসিন্দা গণমাধ্যম কর্মী জাহিদুল বাশার জানান, বৃহস্পতিবার দুবলার চর থেকে জেলেদের উদ্ধারে পাঠানো আবেদন পত্র ও অপহৃতদের তালিকা সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে দেয়া হয়। সন্ধ্যার দিকে আবেদন পত্রটি র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে ফরওয়ার্ড করা হয় বলে জানতে পারি।

এছাড়া ঘটনাটি যেহেতু সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে ঘটেছে এজন্য শরণখোলা থানার ওসি এবং অপহৃত জেলেদের ১১জনই সাতক্ষীরার বাসিন্দা হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন খানার ওসির সাথে কথা বলে তাদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তারা সার্বিক সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এ বিষয়ে দুবলার চর জেলেদের শীর্ষ নেতা কামাল উদ্দিনের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান জাহিদুল বাশার। তিনি বলেন অপহরণের পরদিনই আটক ডাকাত জাহাঙ্গীর ও কয়োজন জেলেকে নিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় কোস্টগার্ড অভিযান চালালেও অপহৃতদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এদিকে ডাকাতদের দেওয়া মোবাইল নাম্বার ধরে প্রযুক্তি সহায়তায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত করার দাবি জেলেদের। এর আগে র‌্যাব ও কোস্টগার্ড বিভিন্ন অভিযানে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বহু অপরাধী শনাক্ত করেছে। এবারাও তেমনটা করা হবে আশা সংশ্লিষ্টদের। তবে ঘটনাটি গত ৪ দিন আগে ঘটলেও ভুক্তভোগী জেলেদের পক্ষ থেকে কেউ এখনো শরণখোলা থানায় অপহরণের কোন মামলা বা অভিযোগ কিছু দায়ের করেনি। যার কারণে আইনগত প্রতিকার পেতে অপহরণের কোন অফিসিয়াল তথ্য নেই।

তবে দ্রæত কয়েকজনকে পাঠিয়ে মামলা করা হবে জানান দুবলার চরের জেলেদের নেতারা। এদিকে এই ঘটনায় জেলেদের হাতে আটক ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শরণখোলা থানায় যে অস্ত্র মামলা হয়েছে সেখানে অপহরণের কোন তথ্য উল্লেখ নেই বলে জানিয়েছেন আশাশুনির চাকলা বেল্টের জেলেদের সভাপতি মেম্বর আব্দুর রউফ।

অপহৃত জেলেরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের মো. দাউদ আলী সানার ছেলে অজাহারুল ইসলাম, চাকলা গ্রামের মো. মহিজুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম, একই গ্রামের মো. নুরমান আলী সরদারের ছেলে অরাফাত হোসেন, শামছুর রহমান গাজীর ছেলে শাহাজান গাজী, রুইয়ারবিল গ্রামের জুলফিকার সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন, একই গ্রামের শহর আলী গাজীর ছেলে হাফিজুর রহমান, আব্দুল হক সানার ছেলে মো. শাহীনুর আলম, দিঘালারাইট গ্রামের মো. আবু দাউদ জদ্দারের ছেলে মো. রাসেল, শ্রীপুর গ্রামের মো. রুহুল আমিন ঢালির ছেলে মো. শাহাজান ঢালী ও দৃষ্টিনন্দন গ্রামের মো. আনিচ সরদারের ছেলে নুরে আলম এবং শ্যামনগর উপজেলার বন্যতলা গ্রামের আবু তালেবের ছেলে শাহ্ আলম।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন