রাজধানীতে শুরু হলো লেদারটেক বাংলাদেশ-২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী লেদারটেক বাংলাদেশ ২০২৪-এর দশম আসর শুরু হলো বৃহষ্পতিবার। চামড়া, জুতা তৈরির যন্ত্রপাতি, জুতার বিভিন্ন উপকরণ, রাসায়নিক ও আনুষঙ্গিক পণ্যের সমাহার নিয়ে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) এক্সপো জোনে চামড়া শিল্পের এই প্রদর্শনী চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহ মোহাম্মদ মাহবুব, নির্বাহী সদস্য (অতিরিক্ত সচিব), মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা)। এছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেদার ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ-এর সভাপতি এ কে এম মুশফিকুর রহমান মাসুদ; ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েস্টেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ; বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন; লেদার গুডস অ্যান্ড লেদার ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম; বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী মো. ফজলু; এবং উইলহেম টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আইএফসিওএমএ-এর প্রতিনিধি এরিক ইলিং।
প্রদর্শনীটির দশম আসরে ২০টি দেশের প্রায় ২০০ প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এটি বাংলাদেশের চামড়া, জুতা ও ভ্রমণ সামগ্রী খাতের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন এবং অনুসন্ধানের সবচেয়ে পছন্দসই প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাত বেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে এই খাতের উৎপাদনকারীরা গুণগত মান, দক্ষতা এবং পরিবেশগত দিক বিবেচনায় রেখে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও সমাধান চান। এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তারা সারাবছর লেদারটেক বাংলাদেশ প্রদর্শনীর জন্য অপেক্ষায় থাকেন, যাতে এই প্রদর্শনীতে এসে দেখে-বুঝে তাদের প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও উপকরণ সংগ্রহ করতে পারেন।
নতুন অর্ডার আসতে থাকায় সাম্প্রতিক প্রান্তিকগুলোয় এই খাতের রপ্তানি আয় বিগত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, যা দীর্ঘদিন ধরে করোনা মহামারীর ধাক্কায় ধুঁকতে থাকা চামড়া শিল্পের জন্য শুভ লক্ষণ। কোন কোন দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চললেও বাংলাদেশে বর্তমানে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রয়াদেশ ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশের তুলনামূলক সাশ্রয়ী শ্রমের মজুরীর কারণে “মেইড ইন বাংলাদেশ” ট্যাগ যুক্ত জুতা আরও সাশ্রয়ী করে তোলা সম্ভব হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য (অতিরিক্ত সচিব), শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, “ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে দেশের রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো সম্ভব হবে। চামড়া, চামড়াজাত পণ্য ও খাতসংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি পণ্যের এই প্রদর্শনী রপ্তানি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।“
এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনস্ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক নন্দ গোপাল কে বলেন, " এবারের প্রদর্শনীতে চীনের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জুতা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনাকেই প্রতিফলিত করে। বিগত বছরগুলোতে লেদারটেক বাংলাদেশ "চামড়া শিল্প নেটওয়ার্কিং ফোরাম" হিসাবে ফুটওয়্যার এবং ট্রাভেল গুডস সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিন দিনের এই প্রদর্শনী থেকে স্থানীয় শিল্প ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।“
বাংলাদেশের চামড়া ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ খাতের (স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী উভয় ক্ষেত্রে) গুণগত মানসম্পন্ন কারখানাগুলো তাদের বিদ্যমান উৎপাদন সক্ষমতা নিয়ে উচ্চমানের পণ্য উৎপাদনে উন্মুখ হয়ে রয়েছে। এলডব্লিউজি সার্টিফিকেশনের পর চামড়া খাত বাজার সম্প্রসারণ এবং রফতানি বৃদ্ধির প্রত্যাশায় রয়েছেন তারা। বাংলাদেশ চামড়াজাত পণ্যের একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী দেশ হিসাবে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এই খাতের উৎপাদনে সাময়িক মন্দা দেখা দিলেও বর্তমানে পুনরায় সারা বিশ্বে রপ্তানি শুরু হয়েছে।