ডার্ক মোড
Saturday, 21 June 2025
ePaper   
Logo
যশোরে বেড়েছে করোনা সুরক্ষা সামগ্রীর দাম, নেই তদারকি

যশোরে বেড়েছে করোনা সুরক্ষা সামগ্রীর দাম, নেই তদারকি

জেমস আব্দুর রহিম রানা, যশোর
দেশে আবারও করোনার সংক্রমণ দেখা গেছে। গত তিন দিনে যশোর জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত তিনজন রোগী। এ অবস্থায় করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। তাই দীর্ঘ সময় পর অনেকে ফের মাস্ক কেনার দিকে ঝুঁকছেন। তবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনতে গিয়ে হতাশ হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে প্রতি বাক্স মাস্কের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মাস্কের দাম বৃদ্ধি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাস্কের দাম দীর্ঘ সময় স্থিতিশীল ছিল। এখন হঠাৎ করে মাস্কের চাহিদা বাড়ায় কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আমরা আগের দামে মাস্ক পাচ্ছি না। যে পরিমাণ মাস্কের চাহিদা দিচ্ছি, তারা তার অর্ধেক মাস্কও আমাদের সরবরাহ দিচ্ছে না। এদিকে শুধু মাস্ক নয়, অনেক দোকানে মিলছে না হ্যান্ড স্যানিটাইজারও। অনেক দোকানদার বাড়তি দামে বিক্রির আশায় স্যানিটাইজার ‘নাই’ বলে ক্রেতাদের ফেরত দেয়ার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। আবার যা পাওয়া যাচ্ছে তাও দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে।
শুক্রবার শহরের দড়াটানা ও চিত্রা মোড়ের সার্জিক্যাল পণ্য বিক্রির দোকান ও বিভিন্ন ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ায় মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের আগে যশোরের বাজারে যেসব মাস্ক বক্সপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হতো, সেই মাস্ক এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।
 
যশোর শহরের মাইকপট্টি এলাকার সিনা মেডিকেল স্টোরের ওমর ফারুক বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় হঠাৎ করে মাস্কের দাম বেড়ে গেছে। সরবরাহ ঠিক না থাকলে দাম আরো বাড়তে পারে। আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার অর্ডার দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। কোম্পানির প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তারা জেনেছেন সেগুলো উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো ঢাকার চাহিদা মেটাচ্ছে। আপাতত জেলা শহরে আসছে না।
শহরের দড়াটানার লাইফ সার্জিক্যাল এর বিক্রয়কর্মী রিজভী হোসেন বলেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও ফেসম্যাক্সের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। আগে আমরা পাইকারি মাক্স’র বক্স কিনতাম ৫০-৫৫ টাকা। পাইকারি বিক্রি করতাম ৮০-৯০ টাকা। এখন পাইকারিই কিনতে হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। তাও সরবরাহ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে কোনো পণ্যের যখন হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যায় তখন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকেও পণ্য সরবরাহ দিতে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ ব্যবসায়ীদের কাঠগড়ায় তোলেন।
একই কথা বলেন শহরের মাইকপট্টির বিসিডিএস মেডিসিন মার্কেটের বিচিত্রা সার্জিক্যালের সত্ত্বাধিকারী নবকুমার। তিনি জানান, কোম্পানিগুলো করোনা সুরক্ষার পণ্য সরবরাহ দিতে পারছে না। সামান্য যা আসছে তার দামও বেশি। আমাদের বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। এজন্য বিক্রির দামও বেড়েছে।
 
এনামুল হাসান, কামরুজ্জামান ও সোহান হোসেন নামের কয়েকজন ক্রেতা শহরের চিত্রা মোড়ে বঙ্গবাজারে গতকাল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক ক্রয় করতে আসেন। তারা জানান, করোনার প্রকোপ বাড়ার পর থেকে যেসব মাস্কের দাম বাড়ানো হয়েছে, এগুলোতে কম দামে কেনা। প্রতিটি বাক্সে যদি ব্যবসায়ীরা ১০০ টাকা লাভ করেন, তাহলে এটাকে তো নৈরাজ্য বলতে হবে। লাভ করার তো একটা সীমা আছে। তাই প্রশাসনকে এদিকে নজর দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, করোনা সুরক্ষা সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির বিষয়টি তারা খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
 

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন