
মুন্সীগঞ্জে ভূল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যু, টাকার বিনিময়ে সমবোঝতা
মুন্সীগঞ্জ (দক্ষিন)প্রতিনিধি॥
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে চিকিৎসকের ভূল অস্ত্রোপচারে নাজনিন আক্তার (২৪) নামের এক গৃহবধূ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহত নারীর স্বজনরা গত সোমবার সকালে হাসপাতালে ভাঙচুরের চেষ্টা চালালে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসে ঘটনাটির সমঝোতা হয়। এর আগে রোববার বিকেলে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের নিমতলা এলাকার বসুমতি জেনারেল হাসপমাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার মধ্য হাসাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী নাজনিন আক্তার পিত্তথলির সমস্যা নিয়ে রবিবার সকালে নিমতলা বসুমতি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক হাসান জুলকার ও অবেদনবিদ মো. সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে বেলা ৩টার দিকে তাঁর পিত্তথলিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। এ সময় নাজনিন আক্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকার ধোলাইপাড় ডেল্টা হাসপাতাল নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্বজন ও উত্তেজিত লোকজন বসুমতি জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মো. ফজলুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং হাসপাতাল ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। পরে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের মধ্যে টাকার বিনিময়ে সমঝোতা হয়।
নাজনিন আক্তারের মামা শাহীন শেখ বলেন, ‘যেহেতু একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, এখন হেনস্তা করলে করা যাবে, কিন্তু আমার ভাগনির আট মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। শিশুটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমরা ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে একটা সমাধান করেছি।’
বসুমতি জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা নিহতের পরিবারের সঙ্গে সমাধান করেছি। নাজনিন আক্তারের একটি আট মাসের শিশুসন্তান রয়েছে। তার ভরণপোষণ বাবদ আমরা তাকে একটা অ্যামাউন্ট (অঙ্কের টাকা) দিয়ে দেব।’
এ বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জামশেদ ফরিদী বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহেদ আল মামুন বলেন, রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত জনতা হাসপাতালে হামলা চালানোন শঙ্কা রয়েছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনা কোনো পক্ষের লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।