ডার্ক মোড
Thursday, 05 December 2024
ePaper   
Logo
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলমের ব্যাপক গণসংযোগে নারী-পুরুষের ঢল

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলমের ব্যাপক গণসংযোগে নারী-পুরুষের ঢল

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর এখনো নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণার আগেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম সিআইপি তার জন্মভূমি ও নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে বিরামহীনভাবে ব্যাপক গণসংযোগ করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় করে তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

এছাড়াও মরহুম দলীয় নেতা কর্মীদের কবর জিয়ারত ও দলীয় নেতাকর্মীসহ এলাকার জনগনের সাথে মতবিনিময় করছেন তিনি।

গত শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে প্রথমে তিনি উপজেলার আব্দুল্লাহপুর জগতচর মাদ্রাসার বার্ষিক ইসলামী মহা-সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণ শেষে মাদ্রাসার নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। পরে বিকেলে উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের বড়ছয়সূতী চকবাজার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও ধূপাখালী গ্রামের হযরত সানাউল উলুম মাদ্রাসা পরিদর্শন শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর বিএনপি-জামাতের ডাকা অবরোধ চলাকালীন সময় ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের গুলিতে নিহত রেফায়েত উল্লাহ’র ১৬ মাস বয়সের একমাত্র শিশু কন্যা লামিয়াসহ তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের খোঁজ খবর নেন।

এরপর তিনি ফরিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রবীণ বিএনপি নেতা মরহুম শামসুল হক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মরহুম ইউনুস আলীর কবর জিয়ারতসহ তার মা’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং ফরিদপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মরহুম বোরহান মেম্বারের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

এছাড়া তিনি ফরিদপুর ইউনিয়নের খিদিরপুুর গ্রামের ইউনুস আলীর বাড়িতে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। সেখান থেকে তিনি আমোদপুুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গ্রামবাসীর সাথে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। মতবিনিময় সভা শেষে আলালপুর গ্রামে দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেন। রাতে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদে নব-দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মোবারক হোসেন ও পরিষদের সদস্যবৃন্দ এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় করেন।

এরপর তিনি ফরিদপুর আনন্দবাজারে এক ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য রাখেন। সেখান থেকে রাত ৯ টার দিকে সালুয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সালুয়া কাল্লারপাড় এলাকায় প্রয়াত দলীয় নেতাকর্মীদের স্বরণে আয়োজিত এক শোকসভায় অংশগ্রহণ করেন। রাত ১০ টার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এক ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
দীর্ঘদিন পর নিজ নির্বাচনী এলাকায় আগমন উপলক্ষে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাদের প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় অনেককে। মহিলারাও এসুযোগ হাতছাড়া করেননি, তারাও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের এলাকার সন্তান শরীফুল আলমকে দু’নয়ন ভরে দেখেন। তাদের প্রিয় নেতা শরীফুল আলমও গাড়ী থেকে নেমে নারী পুরুষের সাথে কুশল বিনিময় করে তাদের খোঁজ খবর নেন। এসময় দলীয় নেতা কর্মীরা তাদের প্রিয় নেতাকে ফুলের তোড়া দিয়ে ও ফুলের মালা পড়িয়ে বরণ করে নেন।

গণসংযোগকালে মো. শরীফুল আলম বলেন, আপনারা সজাগ থাকবেন। একটি বিষয়ে একটু বলে দেই, ৫ই আগষ্টের পর নানাবিধ ভাবে ছোট খাটো নানা ধরনের বিভিন্ন রকম অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার জন্য একটি মহল তৎপর আছে। আপনাদেরকে একটু সজাগ থাকার জন্য বলবো। সকল কিছুর পরে ইদানিংকালে একটা বিষয় আপনারা দেখবেন ইসকন। এটাকে নিয়ে নানা ধরনের একটা ষড়যন্ত্র বাংলাদেশে চলছে। বহির বিশ্ব বা একটা রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন ভাবে উসকানিমূলক অনেক কথা বলছে। যত উসকানিই আসুক, যত কথাই আসুক আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণ করবো। কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কোন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আমরা বিচ্ছিন্ন ভাবে কোন কর্মসূচি, কোন কিছু পালন না করি।

আমরা যেন সমন্বয় করে, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করি।একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সারা বাংলাদেশে হোক আমরা সেই সুযোগ দেবোনা। চট্টগ্রামে আপনারা দেখেছে, আমাদের এক ভাই এডভোকেট সাইফুল ইসলামকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য অনেক ধরনের কথা, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আলেম উলামাদের কাছে আমার অনুরোধ, হুট করে কোন পরিস্থিতিতে যেন আমরা কোনরকম পদক্ষেপে আগাইয়া না যাই। রাস্ট্র পরিস্থিতিতে আজকে সামাজিক ভাবেও আমরা একসাথে আছি।

একটি রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা দেশে আছি। সকলে সম্মলিত ভাবে আমরা যেন যে কোন পদক্ষেপে আগাই। প্রশাসনসহ আমরা যেন এ ব্যাপারে একটু সজাগ থাকি। প্রিয় এলাকাবাসী আপনারাও সজাগ থাকবেন। দেশকে শেষ করে দিয়েছে। তার পরেও এখন পর্যন্ত দেশকে আবারো একটা রসাতলে নেওয়ার জন্য অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ ও সজাগ ভাবে আমরা চাই ভোটের অধিকার।

সেই অধিকারটুকো ফিরে আসুক। জনগণের হাতে যেন আমরা মালিকানা ফিরিয়ে দেই। জনগণের দ্বারা যাকে খুশি তাকে এ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হোক। এটাই আমাদের মূল দায়িত্ব। আমরা সেই দায়িত্ব পরিপূর্ণ ভাবে পালন করেতে পারি নাই। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পতিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ভৈরব-কুলিয়ারচরে ৫ জন শহিদ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, গত ১৭ বছর আমরা ভোট দিতে পারি নাই। ভোটের অধিকারের কথা, গণতন্ত্রের কথা বললেই গুম, খুন, জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আমরা ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চাই।

দিন ব্যাপী গণসংযোগ কালে তার সাথে ছিলেন, কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল মিল্লাত, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি এডভোকেট মশিউর রহমান, কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. শাহাদাৎ হোসেন শাহ্ আলম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন খান শাহজাহান, সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জজকোর্টের এপিপি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ্ আলম ও সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুকুল ইসলাম ফারুক সহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীবৃন্দ।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন