বাঘায় গণঅভ্যুত্থানে আহত-শহিদদের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাঘায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার(২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মী আক্তার। পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মনসুর আলীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবিহা আক্তার ডলি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আহত রনি আহম্মেদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পক্ষের সজিব আহম্মেদ,বাঘা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফখরুল হাসান বাবলু,উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন,বাঘা উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুল্লাহ আল মামুন,সাবেক আমির জিন্নাত আলী,শাহদৌল্লা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন,মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আ ফ ম হাসান, সাংবাদিক লতিব মিক্রা প্রমূখ।
আহত রনি স্মৃতিচারণ বক্তব্যে বলেন,গত ১৯ জুলাই মাগরিবের আজান হবে–সেই মুহূর্তে ড্রোন এসে দেখে যায় কোন কোন ব্লকে লোকজন আছে। তারা রাস্তা ব্লক করে প্রধান সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে যান। ওপরে হেলিকপ্টার চক্কর দিয়ে গুলি ছুঁড়ছে। পুলিশ-বিজিবি সোসাইটির মধ্যে ঢুকে অ্যাভিনিউ রোডে গুলি করা শুরু করল। নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য দূরে গেলেন রনি। সামনে ৪-৫ জন ছিল, গুলি লেগে তারা পড়ে গেলেন। তাদের লাশ নেওয়ার জন্য গুলি করতে করতে ধাওয়া করল পুলিশ। ‘ বিজিবির ছোড়া গুলি বাঁ পায়ের উরু ভেদ করে বের হয়ে গেল। অনেক রক্তপাত হচ্ছিল। ভাবলাম আর বাঁচব না, কলেমা পড়া শুরু করলাম।
পরে বনশ্রীর এফ ব্লকের ৩ নম্বর রোডে আশ্রয় নেন । সেখান থেকে জি ব্লকের ৩ নম্বর রোডের একটি বাসায় নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এক চিকিৎসক। পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দেখেন বহু মানুষ গুলিবিদ্ধ। সিট নেই, মেঝেতে চিকিৎসা চলছে। পরে বনশ্রীর ভাড়া বাসায় চলে যান তিনি। সেখান থেকে গোপনে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ২৬ জুলাই চিকিৎসক বললেন, ‘এখানে আইসেন না, তুলে নিয়ে যাবে।’
এরপরে ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরলেও ভয়ে বাড়িতে ছিলেন না রনি। পাশের উপজেলায় বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লে নিজ বাড়িতে ফেরেন রনি। ১০ আগস্ট থেকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলার আহত রনি আহম্মেদের বাবা এলাহি বক্স ওরফে আফাং, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.আশাদুজ্জামান আসাদ,কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান, বাঘা পৌর জামায়াতের আমির সাইফুল ইসলাম,রহমতুল্লাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল ইসলাম বাঘা মডেল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাবিল উদ্দিনসহ উপজেলার বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ্র।