
পরীক্ষায় উৎরেছে রূপপুরের রিয়্যাক্টর কন্টেইনমেন্ট
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরীক্ষা নিরীক্ষার অংশ হিসেবে একটি রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টের কন্টেইনমেন্ট (সুরক্ষা ব্যুহ) এর অভেদ্যতা ও দৃঢ়তার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
রাশিয়ার কারিগরি ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রোসাটমের পক্ষে থেকে বুধবার এ তথ্য জানান হয়।
রোসাটমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরীক্ষায় নকশা অনুযায়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টের কন্টেইনমেন্টের সর্বোচ্চ নিরাপত্তামান নিশ্চিত হয়েছে।
“পরীক্ষাকালে নকশা অনুযায়ী কন্টেইনমেন্টের অভ্যন্তরীণ চাপ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর জন্য ব্যবহৃত হয় একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কম্প্রেসার। এসময় এই অবকাঠামোটির দৃঢ়তা ও অভেদ্যতার পরীক্ষা করা হয়।”
কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কন্টেইনমেন্টের ভেতরে চাপ বৃদ্ধি পেলে তা কতটুকু সহ্য করতে সক্ষম তা পরখ করাই এ পরীক্ষার লক্ষ্য।
রোসাটম বলছে, পরমাণু জ্বালানি লোডিং এর আগে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। কারণ কোনো বিপর্যয় ঘটলে কন্টেইনমেন্টই হচ্ছে শেষ সুরক্ষা ব্যুহ।
কন্টেইনমেন্ট মূলত একটি অতি সুদৃঢ় কাঠামো যা নির্মাণে ব্যবহৃত হয় প্রিস্ট্রেসড রিইনফোর্সড কংক্রিট এবং এর ভেতরের দেওয়ালে থাকে একটি শক্ত ইস্পাতের আবরণ। এর নকশা এমনভাবে করা হয়, যাতে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ রিয়্যাক্টর কমপার্টমেন্টের বাইরে বের হতে না পারে। সমস্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ এই কন্টেইনমেন্টের ভেতরেই আবদ্ধ ও সুরক্ষিত অবস্থায় থাকতে পারে। বাহ্যিক বড় কোনো আঘাত ও বিপর্যয় রোধ করতে সক্ষম এই সুরক্ষা ব্যুহ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে শিগগিরই কিছু ‘হট মিডিয়া টেস্ট’ চালানো হবে। এর অংশ হিসেবে কুল্যান্ট সার্কিটকে নকশা অনুযায়ী নির্ধারিত তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা এবং বাষ্প উৎপাদন করা হবে। এছাড়া সক্রিয় অবস্থায় বাষ্প নির্গমনকারী ডিভাইসের নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হবে। এই পরীক্ষার সময় বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ তৈরি হবে, যা স্বাভাবিক।
এ নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে রোসাটম।
প্রতিটি ইউনিটে ১২০০ মেগাওয়াট করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রথম ইউনিটের কাজ প্রায় শেষ দিকে, যা এখন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।
দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের সাবেক পরিচালক জাহেদুল হাসান।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালনে প্রয়োজনীয় গ্রিড লাইনও প্রস্তুত হয়েছে বলে গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ-পিজিসিবি জানিয়েছে পাওয়ার।