ডার্ক মোড
Thursday, 05 December 2024
ePaper   
Logo
নারায়ণগঞ্জ জেলায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত স্বজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন

নারায়ণগঞ্জ জেলায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত স্বজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ জেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত আবুল হাসান স্বজন (২৫) এর মরদেহ দাফনের আড়াই মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত উজ জামান ও পুলিশের উপস্থিতিতে বুধবার (২৩ অক্টোবর) জেলার বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ কবরস্থান থেকে মরদেহটি তোলা হয়।

পরে পুলিশের সুরতহাল শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিহত স্বজনের পরিবারের সদস্যরাও।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় ছাত্র জনতার আন্দোলন চমরদেহালে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের গুলিতে গুরুত্বর আহত হন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি আবুল হাসান ওরফে স্বজন। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অপারেশন করে পেট থেকে বের করা হয় গুলি। তবে অপারেশনের পরদিন ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় চিকিৎসাধিন অবস্থায় আইসিইউতে স্বজনের মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনের মরদেহ নিজ এমরদেহায় দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত আবুল হাসান স্বজনের বড় ভাই আবুল বাশার অনিক বাদী হয়ে ১৮ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নারায়ণগঞ্জের সাবের প্রভাবশালি সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সহ ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা দুইশ’ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলায় এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলককের নামও রয়েছে।

পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার দাবি করেন নিহতের পরিবার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।

মামলার বাদি ও নিহতের বড় ভাই অনিক বলেন, আমার ভাই স্বজন হত্যার ঘটনায় সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করি। সেই মামলায় তদন্তের জন্য আজকে স্বজনের মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আজকেই আবার দাফন করা হবে। আমি ও আমার পরিবার সরকারের কাছে দাবি করছি স্বজন হত্যার মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে যেন উপ যুক্ত শাস্তি ও ন্যায় বিচার করা হয়।

স্বজনের মরদেহ উত্তোলনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা সংগঠক ফারহানা মানিক মুনা বলেন, আমরা আবুল হাসান স্বজন সহ নারায়ণগঞ্জের যতো শহীদ হয়েছে এই আন্দোলনে, তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমাদের তৎপরতা অব্যহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি বহু চিহ্নিত হত্যাকারিরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা এখন আমাদের অন্যতম লড়াই।

মরদেহ উত্তোলনের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ফরিদ আহম্মদ বলেন, মামলাটির তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে আজ কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। আমরা মরদেহের সুরতহাল করেছি। পরে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এই মামলায় এখন পর্যন্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন