
দোহারে ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ৩৩ ভরি স্বর্নালংকার ও নগদ ২ লক্ষ টাকা লুট
মাহবুবুর রহমান টিপু, দোহার ও নবাবগঞ্জ(ঢাকা)প্রতিনিধি:
ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম সুতারপাড়া এলাকায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা
ঘটেছে। এ সময়ে ডাকাতরা বাড়ির সকলকে হাত—পা বেধেঁ ৩৩ ভরি স্বর্নালংকার ও নগদ দুই লক্ষ টাকা লুটে নেয় বলে অভিযোগ গৃহকর্তা
মো.শাহজাহানের। মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো.শাহজাহানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
মো.শাহজাহান(৫০) পশ্চিম সুতারপাড়া গ্রামের মৃত.মনতাজুল ইসলামের ছেলে। শাহজাহানের জয়পাড়া বানিজ্যিক শহরে মেসার্স আল—জাহান
ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস নামে একটি প্রতিষ্ঠান, আল—জাহান নামে একটি মটর সাইকেলের শো—রুম ও মেঘুলা বাজারে স্বপ্ন সুপার শপের
মালিক।শাহজাহান জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে পশ্চিম সুতারপাড়া এলাকায় তার দ্বিতল বাড়িতে ৫/৬ জনের একটি ডাকাতদল হানা দেয়। এ সময়ে ভবনের নিচতলার বারান্দার গ্রিলের তালা কেটে ডাকাতদল বাড়িতে প্রবেশ করে। নিচতলায় কাউকে না পেয়ে ডাকাতদল মাক্স পরিহিত অবস্থায় ভবনের দ্বিতীয়তলায় ঢুকে আমার শোয়ার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে প্রথমে আমাকে হাত—পা,মুখ বেধেঁ পাশের অন্য একটি খালি ঘরে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে আমার স্ত্রী আকলিমা আক্তারকে হাত বেধেঁ ভার্সিটিতে পড়–য়া মেয়ের ঘরে নিয়ে একই কায়দায় প্রবেশ করে তাদেরকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত—পা বেধেঁ ফেলে রাখে। পরে আমার স্ত্রী আকলিমাকে নিয়ে আলমারির খুলে দুই মেয়ে ও স্ত্রীর ব্যবহৃত ছোট—বড় ৭টি স্বর্নের চেইন, ৩টি স্বর্নের হার, বিভিন্ন সাইজের ১২টি স্বর্নের চুড়ি ও রুলি, কোমরে ব্যবহৃত একটি স্বর্নের বিছা/হার, ১০ জোড়া বিভিন্ন সাইজের স্বর্নের দুল, ১২টি স্বর্নের আংটি ও ডজন খানেক নাকফুল এবং আলমারিতে রাখা নগদ দুই লক্ষ টাকা লুটে নেয়।পরে ডাকাতদল ঘরের নিরাপত্তায় থাকা সিসি ক্যামেরার
হার্ডডিস্কটি লুটে নেয়। এ সময়ে আমাদের ব্যবহৃত ৫টি ফোন বাড়ির নিচতলায় ফেলে রেখে যায়।এ সময়ে আমাদের আর্তচিৎকারে কেউ তাৎক্ষনিক আসে নি।পরে জানতে পারলাম আমাদের প্রতিবেশী তিন বাড়ির কেউ বাড়িতে ছিলেন না।সংবাদ পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত আলামত ও ডাকাতদলের পোশাক জব্দ করেছেন। এ বিষয়ে শাহজাহানের পড়–য়া বড় মেয়ে ফারইষ্ট ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ালিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান(২১) জানান, ডাকাতদল মুখে কালো মাক্স ও মাথায় মুখোশ পড়ে হাতে ধারালো দা নিয়ে আমাদের জিম্মি করেন।পরে আমাদের হাত—পা বেধেঁ ফেলে রাখেন এক কিশোর ডাকাতের প্রহরায়। এ সময়ে আমাদেরকে বার বার শাসিয়ে যায়,আমরা যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট কিছু না বলি।এ সময়ে আমার বাবাকেও শাসিয়ে যায়, পুলিশকে জানালে আমার দুই বোনকে গুম করে ফেলবে। এ বিষয়ে গৃহকর্তি আকলিমা আক্তার জানান, আমার দুই মেয়ে ও আমার ব্যবহৃত মোট ৩৩ ভরি স্বর্নালংকার ও আমার স্বামীর রাখা শো—রুমের দুই লক্ষ টাকা আলমারিতে রাখা ছিলো,যা ডাকাতদল লুটে নেয়। এ বিষয়ে শাহজাহানের ভাতিজা চিকিৎসা বিজ্ঞানে (আইএসটি) মহাখালিতে পড়–য়া তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাদিম মাহমুদ(২২) জানান, ডাকাতির ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। কারন ডাকাতদল সবাই শর্টপ্যান্ট পরিহিত ছিলো।তাছাড়া ডাকাতদল জানলো কিভাবে যে, কোন কোন আলমারিতে স্বর্নের অলংকার রাখা আছে।তাছাড়া আমাদের আশপাশের তিন বাড়ি খালি,সবাই বেড়াতে গেছে এই সংবাদ ডাকাতদল জানে কিভাবে? এ বিষয়ে দোহার থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, রাতেই সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরে দুপুরে সিনিয়র অফিসার নিয়ে দ্বিতীয় বারও ঘটনাস্থল ও আলামত সংগ্রহ করেছি। বাদীর অভিযোগ পেলেই মামলা রুজু করা হবে। দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, খবর পেয়েই দোহার থানা পুলিশসহ আমি ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যাই।সিসিটিভি ফুটেজের আলামত ডাকাতদল নিয়ে গেছে।এরপর তথ্য প্রযুক্তিরসাহায্য নেওয়া হচ্ছে, স্থানীয় কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দোহার,ঢাকা।