ডার্ক মোড
Sunday, 02 February 2025
ePaper   
Logo
দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তার প্রতি দিন হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা

দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তার প্রতি দিন হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা

এ. বি. রাজ্জাক

পঞ্চগড়ের বোদার সদ্য বিদায়ী সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে শেষকর্ম দিবসে বেআইনিভাবে জমি রেজিস্ট্রি করানো অভিযোগ উঠেছে। সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আকতারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্ধারিত সময়ের পর নয় বিঘা জমির দলিল রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ উঠেছেসম্প্রতি দুদক দায়ের করার এক অভিযোগ সূএে জানা গেছে।

অতি সম্প্রতি দেবীগঞ্জ পৌরসভার নতুনবন্দর এলাকার নব্বই বছর বয়সী জাহেদ আলীকে তার মেয়েরা জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য হুইলচেয়ারে বসিয়ে সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে নিয়ে যান। অথচ তিনি বার্ধক্য ও পক্ষাঘাতজনিত কারনে চলাফেরা ও কথা বলতে পারেন না। ফলে জাহেদ আলীর অন্যান্য ওয়ারিশিয়ানরা দলিল না করার জন্য আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন।

সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে জমি রেজিস্ট্রি কার্যক্রম সম্পন্ন করার বিধান থাকলে সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তার সেই নিয়মের বাইরে গিয়ে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মোটা অংকের টাকা নিয়ে জমিটি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন। যার দলিল নম্বর ১৪১৮। অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যাচাই করলেই প্রমানিত হবে।

খবর পেয়ে জাহেদ আলীর বড় ছেলে মৃত রেজানুর হাসান মঞ্জুর মেয়ে শাহনাজ পারভীন সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যেয়ে সাংবাদিকদের বলেন , আমাকে আমার বাবার হক থেকে বঞ্চিত করে আমার সাত ফুপু নিজেদের নামে জমি লিখে নিয়েছে। আমি সাব রেজিস্ট্রারের নিকট এই বিষয়ে লিখিত আপত্তি দিয়েছিলাম। এরপরও অফিস টাইম শেষে সাব রেজিস্ট্রার মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে একজন ভারসাম্যহীন ব্যক্তি দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করেছেন।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তার অফিস ত্যাগ করার সময়ে গণমাধ্যম কর্মীরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আপনারা আমার জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে কমপ্লেইন করেন। আমি থানায় এবং ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। দাতা রাজি ছিল তাই জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে।

এদিকে, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, দুপুরেও জাহেদ আলীর মেয়েরা সাব রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তখন তাদের চলে যেতে বলেন সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তার।

ঘটনাস্থলে থাকা দেবীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক রবিউল ইসলাম বলেন, জোর করে জমি রেজিস্ট্রি নেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা এখানে এসেছিলাম সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে। এসে দেখি আগেই দলিল রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে।

জাহেদ আলীর নাতনি শাহনাজ পারভীন অভিযোগ করে বলেন, এই পুরো ঘটনায় সাব রেজিস্ট্রারকে সহযোগিতা করেন দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত মঞ্জুরুল ইসলাম মনু। তিনি দলিলটি সম্পাদন করেন।

পুলিশের উপস্থিতিতে গণমাধ্যম কর্মীরা জমির দাতা জাহেদ আলীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মেয়েরা বাধা দেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, দুপুরে তারা একবার এসেছিলেন কিন্তু সাবরেজিস্ট্রার ফিরিয়ে দিয়েছেন। পরে সন্ধ্যায় সেই জমি রেজিস্ট্রি হয়। এ ছাড়া বিকেল ৩টার পর কোনোভাবেই জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেন না সাব রেজিস্ট্রার।

অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তার ইতিপূর্বে নীলফামারীর, ডোমার, পঞ্চগড়, দেবীগঞ্জ, বোদায় কর্মরত থেকে ব্যাপক জন হয়রানি ও দুর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রংপুর ও দিনাজপুর শহরে ২টি বিলাশ বহুল আলীশান বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

তার রয়েছে ব্যাংক প্রচুর টাকা ও দিনাজপুর শহরে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি সাব রেজিস্ট্রার শিরিন আক্তার রংপুরের মিঠা পুকুরে যোগদান করার পর তার ঘুষ দুর্নীতিতে দলিল লেখক ও দাতা গ্রহিতারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন