
ঝিনাইগাতীতে হাসপাতাল থেকে রোগী তাড়াতে সাংবাদিক ভাড়া করলো নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী
শেরপুর প্রতিনিধিঃ
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে হাসপাতাল থেকে রোগী তাড়াতে সাংবাদিক ভাড়া করার অভিযোগ উঠেছে নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী আলিমের বিরুদ্ধে। আলিম (৩০) উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের উত্তর ভারুয়া গ্রামের মরহুম জায়ের উদ্দিনের ছেলে। জানা গেছে, আলিম, তার ভাই ইসলাম, ইসলামের স্ত্রী রেহেনা যৌতুকের দাবিতে আলিমের স্ত্রী হামিদা খাতুন (২৫) কে পিটিয়ে আহত করে। সোমবার (৭ এপ্রিল) উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের উত্তর ভারুয়া গ্রামে আলিমের বাড়িতে এঘটনা ঘটে। হামিদা খাতুন ওই গ্রামের মৃত জায়ের উদ্দিনের ছেলে আলীমের স্ত্রী। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ৫ বছর পুর্বে আলীম জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ডিগ্রিরচর গ্রামের হামেদ
আলীর কন্যা হামিদার সাথে বিবাহ হয়। বিয়ের পর হামিদা খাতুন স্বামীর সংসারের অভাব অনটন দুর করতে পিতার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা ও প্রায় ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র এনে দেন। কিন্তু এর পরেও স্বামী আলিম ও ভাশুর ইসলাম ও তার স্ত্রী রেহেনা আরো ১ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে হামিদার উপর নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসিল। হামিদা খাতুন পিতার বাড়ি
থেকে এক লাখ টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সোমবার ৭ এপ্রিল দুপুরে স্বামী আলিম,ভাশুর ইসলাম ও তার স্ত্রী রেহেনা হামিদা খাতুনকে বেধরক মারপিট করে। এক পর্যায়ে হামিদাকে ঘরে তালা বদ্ধ করে রাখে। রাতে ঘরের তালা খোলা হলে গৃহবধূ হামিদা কৌশলে পালিয়ে অন্যবাড়ি আশ্রয় নেয়। মঙ্গলবার সকালে গৃহবধূ হামিদাকে তার দুই বছর বয়সি শিশু সন্তানসহ উপজেলা সদরের মহারশি নদীর ব্রীজপারে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে হামিদা খাতুন
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এ ব্যাপারে গৃহবধূ হামিদা খাতুন বাদি হয়ে স্বামী, ভাশুর ও ভাশুরের স্ত্রীসহ ৩ জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপরাধীদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আমলে নেয়া হয়নি অভিযোগটি। এদিকে আলিম অসুস্থ্য তার স্ত্রী হামিদা খাতুনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাড়াতে স্থানীয় কতিপয় সাংবাদিককে ভাড়া করে। ওই তথাকথিত সাংবাদিক হামিদা খাতুনকে হাসপাতাল থেকে তাড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নানাভাবে ভয়—ভীতিও হুমকি প্রদর্শন করেন। ফলে ১৩ এপ্রিল রোববার বিকেলে হামিদাকে ছুটি দেয়া হয়। এসময় স্থানীয়বাসিন্দারা হামিদাকে ছুটি দেয়ার
বিষয়টি জানতে হাসপাতালের গেলে জরুরি বিভাগে কর্মরতরা জানান স্থানীয় কতিপয় সাংবাদিক হামিদা খাতুনকে ছুটি দেয়ার জন্য চাপ দেয়। এ কারনে ছুটি দেয়া হয়েছে। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধে হামিদা খাতুনকে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা হয়। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রাজিব শাহা বলেন, কেউ চাপ দেয়নি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী
তাকে ছুটি দেয়া হয়েছে। আলিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল আমিন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে একটি আপোস পস্তাব থাকায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সন্তোষজনক উপায়ে আপোস না
হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।