ডার্ক মোড
Sunday, 15 June 2025
ePaper   
Logo
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে শাহ্ আবদুল হান্নানের চিন্তা, দর্শন ও কর্ম  শীর্ষক ওয়েবিনার

জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে শাহ্ আবদুল হান্নানের চিন্তা, দর্শন ও কর্ম শীর্ষক ওয়েবিনার

 

নিজ্বস প্রতিনিধি

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি) কর্তৃক আয়োজিত জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশকে একটি কল্যাণরাষ্ট্রে রূপান্তর ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে শাহ্ আবদুল হান্নান-এর চিন্তা, দর্শন ও কর্ম  শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুমে শাহ আবদুল হান্নান (রাহিমাহুল্লাহ) এর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

 

ওয়েবিনারে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি ড. ওয়ালিউর রহমান খান বলেন, শাহ আবদুল হান্নান ছিলেন একজন মহান ব্যক্তিত্ব, অভিভাবক, মুরুব্বি ও পথ প্রদর্শক। প্রশাসনে আদর্শবান ব্যক্তিত্বের দৃষ্টান্ত। তিনি ছিলেন সততা ও আদর্শের মূর্ত প্রতিক। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, ব্যাংকিং খাতকে এগিয়ে নেয়া এবং শিক্ষাখাতকে আলোকিত করার কারিগর ছিলেন তিনি। সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির অনেক কঠিন বিষয়গুলো উনি পত্রিকার কলামে তুলে ধরতেন। তিনি ছিলেন সাহিত্যে দ্বিতীয় সৈয়দ আলী আহসান। তিনি সৎ মানুষ ও আলেমদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরির অন্যতম অগ্রপথিক। যে যেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাঁর মতকে গ্রহণ করার মানসিক উদারতা তাঁর ছিল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আজীবন তিনি যুদ্ধ করেছেন। তিনি সদা পার্থিব লোভ-লালসার উর্ধ্বে থেকেছেন। তিনি সকল ঘরানার উলামা কেরামকে সম্মান করতেন এবং সকলের মাঝে ঐক্যের জন্য কাজ করতেন। তাঁর তৈরি করা বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও চিন্তার গতিধারা অব্যাহত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।

 

বিআইআইটি’র ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, শাহ আবদুল হান্নান এর জীবন বহুমাত্রিক নিবেদিতপ্রাণ দাঈ ইলাল্লাহর জীবন। সময় এসেছে উনার শিক্ষাকে আমাদের নিজেদের জীবনে ধারণ করা এবং প্রচার করা। উনি কম কথা বলতেন, কাজ বেশি করতেন। ইখলাসে পরিপূর্ণ অন্তর তাঁর ছিল।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, শাহ আব্দুল হান্নান বাংলাদেশের মাটি-মানুষের একজন গর্বিত সন্তান, শ্রদ্ধার পাত্র। জীবনে অনেক সচিব দেখেছি, কিন্তু এরকম বহুমাত্রিকতার গুণে গুণান্বিত সচিব কখনো দেখিনি। তিনি দেশের মানুষের কাছে অমর হয়ে আছেন, অমরত্ব লাভ করেছেন। তাকে সম্মান জানানোর মাধ্যমে আমরাই সৌভাগ্যবান হবো। তিনি সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে আপন করে নিতেন, ভালোবাসতেন, মিষ্টি হেসে জড়িয়ে নিতেন; তাইতো একজন বৌদ্ধ হয়েও আমি তাকে  এতো গভীরভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। এতে তার নির্মলতা ও শুভ্রতা বুঝা যেতো। এমন বিনয়ী ও গুণী মানুষ সমাজে বিরল, বর্তমানে নেই বললেই চলে। কাজে সুদক্ষ এমন ব্যক্তিত্ব এদেশে আর জন্মাবে কি-না আমার জানা নেই। বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি, শিক্ষা ও আর্থসামাজিক অবস্থা নিয়ে তাঁর কলম ছিল সরব ও ভাষা ছিল প্রাঞ্জল-অসাধারণ।

 

ড. ইবরাহিম খলিল আনোয়ারীর পরিচালনায় ওয়েবিনারে উদ্বোধনী বক্তৃতা দেন বিআইআইটি ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু খুলদুন আল-মাহমুদ এবং সমাপনী আলোচনা করেন বিআইআইটি‘র মহাপরিচালক ড. এম আবদুল আজিজ। আলোচনায় অংশ নেন- ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী , ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ওমর ফারুক, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, ব্রিটিশ পদার্থবিদ লেখক শিক্ষক ও কমিউনিটি লীডার ড. মোহাম্মদ আবদুল বারী, ডেইলি সাবাহ এর সম্পাদক ও বিআইআইটি’র আন্তর্জাতিক সমন্বয়কারী মোহাম্মদ জাকির হোসেন, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শারমিন ইসলাম, ইউনিভার্সিটি সাইন্স ইসলাম মালয়েশিয়া (ইউএসআইএম) এর সহযোগী অধ্যাপক ড. ইউসুফ আলী, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ও বিআইআইটি’র একাডেমিক ফেলো ড. মুমতাহিনা, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস) এর পরিচালক প্রকাশক এমএ মুসা খান, পাইওনিয়ারের প্রেসিডেন্ট ও বিশিষ্ট ব্যাংকার হাবিবুর রহমান।

 

এছাড়া দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন পেশাজীবী, তরুণ চিন্তক, লেখক, গবেষকসহ ও শাহ আব্দুল হান্নানের শতাধিক ভক্ত ও অনুসারীরা ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এতে শাহ আব্দুল হান্নানের উপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিআইআইটি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ গোফরানুল কবির কুরআন তেলাওয়াত করেন। অনুষ্ঠান শেষে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক ফাইন্যান্স (বিআইআইএফ) এর কোর্স কো-অর্ডিনেটর ড. জাকির হোসেন সেলিম আল আজহারী।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন