ডার্ক মোড
Thursday, 05 December 2024
ePaper   
Logo
চট্টগ্রামে ‘আইসিইউ’ সংকট চরমে: রোগী-স্বজনরা দিশেহারা

চট্টগ্রামে ‘আইসিইউ’ সংকট চরমে: রোগী-স্বজনরা দিশেহারা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধ

আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সিটের চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারছেন না। চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সংকটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।

রোগী নিয়ে হাসপাতালগুলোর দরজায় গেলেও ‘সিট’ সংকটের কারণে নানা দুঃশ্চিন্তা ও আতংকের মধ্যেই কাটছে করোনা রোগীর স্বজনরা। তবে করোনা প্রার্দুভাব বেড়ে যাওয়ার ফলে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রশাসেনর পক্ষ থেকেও নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলাচলের জন্য সর্তকতাও জারি করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলে মোট আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১১০টি।
শুক্রবার রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইসিইউ বেডের একটিও খালি নেই বলে জানালেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নগরীর সরকারি প্রধান দুই হাসপাতাল-চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের এবং করোনা রোগীর চিকিৎসায় বিশেষায়িত হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালের ৩০টি আইসিইউ’র সবকটিতে রোগী ভর্তি। একই সাথে পার্কভিউ হাসপাতাল, মেট্রোপলিটন হসপিটাল, সিএসসিআর, ডেল্টা হেলথ ক্লিনিক, মা ও শিশু হাসপাতালে, ম্যাক্স হসপিটাল, ন্যাশনাল হসপিটাল ও মেডিকেল সেন্টারসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউ বেড আছে ৮০টি। যার সবকটিতেই রোগী রয়েছে।

করোনা আক্রান্ত সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘করোনার চিকিৎসায় আইসিইউ এর চেয়ে অক্সিজেন আর হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সবচেয়ে বেশি দরকার। এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতিও রয়েছে। তবুও পরিস্থিতি যেভাবে বদলাচ্ছে, মানুষকে সচেতন হতেই হবে। সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই বললেন তিনি।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই রোগীদের জন্য চাহিদা বাড়তে শুরু করে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা শনাক্তের ঊর্ধ্বগতির কারণে আইসিইউর সিট রীতিমতো সংকটে পড়েছে। গত ১ এপ্রিল দুইজন এবং শুক্রবার ২ এপ্রিল করোনায় মারা গেছেন একজন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৫১৮ জনের। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মোট করোনায় মারা গেছেন ৩৮৮ এবং শনাক্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ৪৮৩ জন।

সাংবাদিক মিজানুর রহমান নামে রোগীর স্বজন বলেন, বাবাকে করোনা সন্দেহে তিন দিন আগে ভর্তি করিয়েছিলাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পর পর দুবার টেস্টের পরও করোনা নেগেটিভ আসে। কিন্তু তার পিতার অক্সিজেন সিচুরেশন আশঙ্কাজনকভাবে কমতে থাকায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পাগলের মতো চট্টগ্রামমের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চষে বেড়ান একটি আইসিইউ সিট পাওয়া যায়নি। একই কথা বললেন করোনা রোগীর আরো স্বজনরা।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আবদুর রউফ বলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ও জেনারেল হাসপাতাল এই দুইটিতে মোট ১৬টি আইসিইউ ও চারটি এইচডিইউর সব কটিতে রোগী ভর্তি রয়েছে। একই অবস্থা বেসরকারি হাসপাতালগুলোরও।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ওই রোগীর জন্য স্বজনেরা সরকারি হাসপাতালে একটি আইসিইউ সিটের জন্য দৌড়ঝাঁপ করেও ব্যবস্থা করতে পারেননি।

বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ৯টি করে আইসিইউ ও এইচডিইউ শয্যা রয়েছে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে এর সবটিতেই রোগী ভর্তি রয়েছে। এছাড়াও ৬০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডের সবকটিতে রোগী আছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন