
বিএনপি নেতার ভাই-ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে ডাকাতির ২০ গরু উদ্ধার
সিলেট ব্যুরো
বিএনপি নেতার ভাই-ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে ডাকাতির ২০ গরু উদ্ধার করা হয়েছে।বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের হাওর সীমান্ত জনপদ কলাগাঁও এলাকায় বিএনপি নেতা শামসুদ্দিনের ভাই-ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে ডাকাতির ২০ গরু উদ্ধার হলেও ডাকাতির বিষয়টি জানেন না থানার ওসি, পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ।
বুধবার তাহিরপুর-মধ্যনগর উপজেলার সীমান্ত হাওর জনপদের মানুষজন জানান, জেলার মধ্যনগরের মহিষখলা বাজার থেকে মঙ্গলবার ২০টি গরু কিনেন একই উপজেলার কলতাপাড়ার গবাদিপশু (গরু-মহিষ) কারবারি বাহার উদ্দিন ও প্রতিবেশী দাতিয়াপাড়া গ্রামের জিল্লু মিয়া।
নৌপথে ওই রাতে ট্রলার যোগে গরুর চালান নিয়ে যাবার পথে ঘাট থেকেই ২৫ থেকে ৩০ জন মুখোশধারী ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে ট্রলারের মাঝি, সুকানি গরু কারবারিদের মারপিট করে ২০ গরু ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি জানাজানির মধ্যনগরের বাঙ্গালভিটা গ্রামের বাসিন্দা গরু কারবারিদের স্বজনরা হাওরে একাধিক ট্রলার নিয়ে সন্ধান করতে থাকেন ডাকাতির গরু উদ্ধারে।
উদ্ধারে বের হওয়ার অপর একটি ট্রলারের মাঝি সুকানীদের ডাকাতদলের সদস্যরা মারপিট করে ট্রলারের তৈলের ট্যাংকি, হ্যান্ডল , নগদ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
এরপর বুধবার সকালে ফের ডাকাতির গরু উদ্ধারের সন্ধানে বের হলে তাহিরপুরের হাওর-সীমান্ত জনপদের মানুষজন সন্ধান দেন মঙ্গলবার গভীর রাতে কলাগাঁও সংসার পাড়ের আলালের বাড়ি, কলাগাঁও আইন উদ্দিনের বাড়ি,এমরান নামে অপর এক যুবদল কর্মীর রাখা কসাই সাইকুলের বাড়িতে গরু তোলা হয়েছে।
এরপর আলালের বাড়ি থেকে ১০টি, আইন উদ্দিনের বাড়ি থেকে ৬টি, কসাই সাইকুলের বাড়ি থেকে এমরানের রাখা ৪টি গরু সহ ডাকাতির ২০টি গরু এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সন্ধান পান ডাকাত দলের কবলে পড়া গরু কারবারিরা।
তাহিরপুর উপজেলার কলাগাঁও সীমান্ত গ্রামের প্রয়াত আব্দুল গফুরের ছেলে উপজেলা বিএনপির সদ্য গঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য সীমান্ত গ্রামের প্রভাবশালী ও গ্রাম্য লাঠিয়াল বাহিনীর মূল হোতা পল্লী চিকিৎসক শামুসদ্দিন ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্যদের ও ডাকাতির ২০ গরু তার হেফাজতে নেন।
উপজেলার সংসার পাড়ের আলালের বাড়ি থেকে ডাকাতির ১০ গরু উদ্ধার করা হয়েছে সেই আলাল বিএনপি নেতার শামসুদ্দিনের ভগ্নিপতি (বোন জামাই) কলাগাঁও আইন উদ্দিনের বাড়ি থেকে ডাকাতির ৬ গরু উদ্ধার করা হয় সেই আইন উদ্দিন শামসুদ্দিনের আপন ছোট ভাই, যুবদল কর্মী এমরানের রাখা কসাই সাইকুলের বাড়ি থেকে ডাকাতির ৪ গরু উদ্ধার করা হয়েছে সেই এমরান, কসাই সাইকুল শামসুদ্দিনের ব্যাক্তিগত লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্য এবং অনুসারী। যে কারনে ডাকাতির বিষয়টি ধামাচাপাঁ দিতে গিয়ে শামসুদ্দিন ভোক্তভোগীদের গরু ফেরত গিয়ে মুছলেখা রাখেন বুধবার দুপুরে উপজেলার কলাগাঁও বাজারে তারই ফার্মেসীতে।
বুধবার বিকেলে মধ্যনগর উপজেলার কলতাপাড়ার গবাদিপশু (গরু-মহিষ) কারবারি বাহার উদ্দিন ও প্রতিবেশী দাতিয়াপাড়া গ্রামের জিল্লূ মিয়া বলেন, বিএনপি নেতা শামসুদ্দিন ভালো করে জানেন ডাকাতি কারা করেছিলো, তার ভাই, ভাতিজা, ভগ্নিপতি,তার লোকজনের বাড়ি থেকেই ডাকাতির ২০ গরু উদ্ধার করা হয়েছে। তারা আরো বলেন, শামসুদ্দিন মুছলেখা রেখেছেন গরু ফেরত দিতে গিয়ে, যেন আইনি ব্যবস্থা নিতে না পারি। গরু ফেরত আনতে গেলে শামুসদ্দিনের ছোট ভাই আইন উদ্দিনের ছেলে রাজু আমাদের নিকট চার লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
বুধবার বিকেলে তাহিরপুর উপজেলার কলাগাঁও সীমান্ত গ্রামের প্রয়াত আব্দুল গফুরের ছেলে উপজেলা বিএনপির সদ্য গঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য পল্লী চিকিৎসক শামুসদ্দিন বলেন, বিষয়টি সমাধান হয় গেছে এ নিয়ে আর পত্রিকায় লেখালেখি করবেন না,সামনে আমি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমার ইমেজ নষ্ট হবে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমার ভাই আইন উদ্দিন বাড়ি থেকে যাকাতির গরু উদ্ধার হয়নি, আলাল সহ অন্যদের বাড়ি থেকে ডাকাতির গরু উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার তাহিরপুর থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন, থানার টেকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই পঙ্কজ দাস বলেন,গরু ডাকাতি পরবর্তীতে তাহিরপুরের কলাগাঁও এলাকা থেকে ডাকাতির গরু কার কার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এসব বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।