
বাপের কাছে ছুটে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না’, মার্কিন হামলা নিয়ে ইসরায়েলকে কটাক্ষ ইরানের
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে ‘কুৎসিত ও অপমানজনক’ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছি, ডনাল্ড ট্রাম্প এমন দাবি করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘অশোভন ও অগ্রহণযোগ্য’ মন্তব্যের কড়া নিন্দা জানিয়েছেন শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
“যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সত্যিই একটি চুক্তি চান, তাহলে তার উচিত হবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মহান আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রতি অসম্মানজনক ও অগ্রহণযোগ্য ভাষা পরিহার করা এবং তার কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থকের অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া বন্ধ করা।
“আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে ইসরায়েলি শাসকদের তাদের ‘ড্যাডির’ কাছে ছুটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। মহান ও শক্তিশালী ইরানি জনগণ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা হুমকি আর অপমান সহজভাবে নেয় না,” সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে শনিবার আরাগচি এমনটাই লিখেছেন।
মার্কিন হামলা নিয়ে ইসরায়েলকে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ কটাক্ষ এমন এক সময়ে এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র তেহরানকে ফের আলোচনার টেবিলে ফেরাতে চাইছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তবে তাদের হামলা কতটুকু কার্যকর ছিল, তাতে ওই স্থাপনাগুলোর কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি, লিখেছে প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা।
ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্ফাহানে ওই হামলার মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটন ইরানে ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের হামলায় যোগ দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের এ হামলার পাল্টায় ইরান পরে কাতারের এক মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারে। তবে আগেভাগে জানিয়ে দেওয়ায় তাদের ওই পাল্টা হামলায় ঘাঁটিটির তেমন কোনো ক্ষতিই হয়নি, কারও হতাহতেরও খবর পাওয়া যায়নি।
ট্রাম্পের যে মন্তব্য নিয়ে আরাগচি কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুক্রবার সেটি করেছেন তার নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে।
সেখানে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, খামেনি অকৃতজ্ঞ। বলেছেন, তিনি ইরানি এ নেতাকে গুপ্তহত্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।
“আমি ঠিকঠাক জানতাম কোথায় তিনি লুকিয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েল কিংবা এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে সেরা ও সবচেয়ে শক্তিশালী মার্কিন বাহিনীকে তার জীবন নিতে দিইনি।
“আমি তাকে খুবই কুৎসিত ও অপমানজনক মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছি। তার ‘ধন্যবাদ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প’ বলার দরকার নেই,” বলেছেন তিনি।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তিনি ইরানের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নিয়েও কাজ করছিলেন বলে জানান এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যে কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারই ইরানের অন্যতম প্রধান দাবি, বলছে প্যারিসভিত্তিক ওই বার্তা সংস্থা।
“কিন্তু না, এর বদলে আমি পেলাম ক্ষোভ, বিদ্বেষ আর ঘৃণাভরা সব বিবৃতি, তাৎক্ষণিক আমি নিষেধাজ্ঞা শিথিলসহ আরও কিছু করার সব কাজ বন্ধ করে দিলাম,” বলেন ট্রাম্প।
তিনি তার পোস্টে ইরানকে ফের আলোচনায় বসারও তাগাদা দিয়েছেন।