হাঙ্গামা এড়াতে জাতিসংঘের সামনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মাঝে পাকিস্তান
যুক্তরাষ্ট্র ব্যুরো
এক পাশে আওয়ামী লীগ, আরেক পাশে বিএনপি-মধ্যিখানে পাকিস্তানীরা বিক্ষোভ করলেন। জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের ভাষণকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপি জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে শান্তি ও স্বাগত সমাবেশ করে। আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ করেছে ড. ইউনূসকে জবর-দখলকারি হিসেবে অভিহিত করে।
পুলিশ প্রহরায় ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শতশত প্রবাসীর পরস্পর বিরোধী এই কর্মসূচিতে আগের মত পানির বোতল ঢেলাঢেলি কিংবা ধাক্কা-ধাক্কি অথবা অকথ্য গালাগালির ঘটনা ঘটেনি। কারণ, এই দুই গ্রæপের মধ্যিখানে ছিলেন পাকিস্তানীরা। তারা ‘পিটিআই’ (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) এর ব্যানারে বিক্ষোভ করেছেন দলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি দাবিতে। গত ১৫ বছরেই জাতিসংঘে শেখ হাসিনার ভাষণের সময় বাইরে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি এবং শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। তবে কখোনই মধ্যিখানে পাকিস্তান দূরের কথা অন্য কোন দেশের লোকজনকে কর্মসূচি পালনের জায়গা দেয়া হয়নি। নিউইয়র্কের পুলিশ এবার কেন পাকিস্তানীদের জায়গা দিল তা নিয়ে নানা কথা রটেছে।
বিএনপির স্বাগত ও শান্তি সমাবেশে নিউইয়র্ক স্টেট ও মহানগর শাখার সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সাথে ছিলেন নিউজার্সি, ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্জিনিয়া, পেনসিলভেনিয়া, কানেকটিকাটসহ বিভিন্ন স্টেটের নেতা-কর্মীরাও। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন। নিউইয়র্কে বসবাসরত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান, বেবী নাজনীন এবং গোলাম ফারুক শাহীন, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা ইলিয়াস খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাকসুদ চৌধুরীও ছিলেন কর্মসূচিতে। নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা আতিকুর রহমান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জসিমউদ্দিন (ভিপি জসীম) এবং সেক্রেটারি সাঈদুর রহমান সাঈদ, নিউইয়র্ক মহানগর (দক্ষিণ) এর সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা এবং উত্তরের সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন, বিএনপি নেতা কাজী আজম, ফিরোজ আলম, জসীম ভ’ইয়া ছিলেন সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্বে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং শ্রমিক দল ও জাসাসের নেতারাও ছিলেন সরব।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে নিউইয়র্ক স্টেট, মহানগরের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও এসেছিলেন ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের কর্মসূচিতে। সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা সংগ্রাম পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, শ্রমিক লীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। গগনবিদারি ¯েøাগানে নেতৃত্ব দেন সিদ্দিকুর রহমান, ড. প্রদীপ কর, এম এ সালাম, এম ফজলুর রহমান, ডা. মোহাম্মদ আলী মানিক, আবুল হাসিব মামুন, আব্দুর রহিম বাদশা, ড. মাহবুবুর রহমান, ইউসুফ ইকবাল, মাহমুদুন্নবী বাকি, রমেশ নাথ, দরুদ মিয়া রনেল, মুজিবউদ্দিন, ফরিদ আলম, মিসবাহ আহমেদ, সিরাজউদ্দিন সোহাগ, আব্দুল কাদের মিয়া, শাহীন আজমল, শেখ আতিক, ইমদাদ চৌধুরী, আজিজুল হক খোকন, শেখ জামাল, সেবুল মিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এসেছিলেন ড. মুহম্মদ ইউনূস। ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণের পর রাতের ফ্লাইটে জেএফকে ত্যাগ করেছেন ড. ইউনূস। অবতরণের দিনও জেএফকে এয়ারপোর্টে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ পরস্পর-বিরোধী কর্মসূচি পালন করে। এছাড়া, ম্যানহাটানে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলের সামনেও উভয় পক্ষ পরস্পর-বিরোধী কর্মসূচি পালন করেছে। তবে কোথাও কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি।