ডার্ক মোড
Sunday, 13 July 2025
ePaper   
Logo
শীতে জবুথবু দোহার ও নবাবগঞ্জ

শীতে জবুথবু দোহার ও নবাবগঞ্জ

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার আকাশ ঢেকে আছে কুয়াশায়। গতকাল শনিবার থেকেই সারদিনই সূর্যের দেখা মেলেনি। আবহাওয়া সুত্রে জানা যায়, ঢাকা রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকলেও দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলাটি নদী বেষ্ঠিত হওয়াতে কুয়াশার সাথে সাথে উত্তরের কনকনে বাতাস মিলিয়ে তীব্র হয়েছে শীতের অনুভূতির সৃষ্ঠি হয়েছে এই অঞ্চলে।

পাশাপাশি দিন ও রাতের (সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা) তাপমাত্রার ব্যবধান থাকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও কম। একই সাথে দোহার উপজেলাটি পদ্মা নদী দ্বারা বেষ্টিত এবং নবাবগঞ্জ উপজেলাটি ইছামতি ও কালিগঙ্গা নদী দ্বারা বেষ্ঠিত।ফলে এখানে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় এবং উত্তর দিক থেকে ঠান্ডা বাতাস বয়ে আসার কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে শীতের তীব্রতা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

রাতে ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান মাত্র ৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে আসে। তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহ বিস্তৃতি লাভ করেছে সারাদেশের সাথে ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায়। এই আবহাওয়া আরও দু’দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানা যায়।

গত দুইদিনে শীত বাড়ায় কষ্ট পাচ্ছে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার নিন্ম আয়ের মানুষের। তীব্র শীতে ভোগান্তিতে পড়ছেন গৃহহীন, ছিন্নমূল ও নিন্ম আয়ের শ্রমজীবী মানুষরা। শীতের কারণে কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন অনেকে। এই শীতে বেশি কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ বয়সী ও শিশুরা।

উপজেলার কাজিরচর আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আনোয়ারা ও তার স্বামী ইব্রাহিমের সাথে আলাপকালে জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এই আশ্রায়ন প্রকল্পের অনেকে। আমি নিজেও আমার স্বামী ইব্রাহিমকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইদিন যাবৎ ডাক্তারের নিকট আসা যাওয়া করছি।

স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে তারা জানান, গত কয়েক দিনে উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ফুটপাতের ছিন্নমূল ও বস্তিতে বসবাসকারী নিম্নবিত্তদের অবস্থাও করুণ হয়ে পড়েছে। পুরোনো লিষ্ট দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নামে মাত্র কয়েকখানা কম্বল বিতরন করেছে।

নওগা থেকে আসা আফাজ উদ্দিন(৫৫) নামে এক শ্রমিকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, দোহার উপজেলায় আড়িয়ল বিলে কৃষি কাজ করেন। থাকেন সুতারপাড়া গ্রামের মনসুর খানের বাড়ির পিছনে।এখানে আরও নিন্ম আয়ের মানুষ ও শ্রমিকরা থাকেন।এ পর্যন্ত এখানে অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক বসবাস করে আসছে।একদিনও কোন চেয়ারম্যান ও মেম্বার নামক কেউ আসেনি শীতের কাপড় দিতে।

দোহার উপজেলায় সুতারপাড়া ইউনিয়নের সুতারপাড়া এলাকায় বাসিন্দা আকলিমা বেগম জানান, নওগা,রাজশাহী, কুষ্টিয়া থেকে অধর্শতাধিক নারী-পুরুষ কৃষি কাজ ও ইট ভাঙ্গার কাজ করে। এরা সবাই রাতে এই এলাকায় থাকে।আমরা যারা নিন্মবিত্ত পরিবারের লোক আছি আমরাই পাই না,শ্রমিকরা পাবে কোথা থেকে?

অহিদা নামক কুষ্টিয়া থেকে আসা এক নারী শ্রমিক জানান, দোহার উপজেলায় কাজ করতে আসেন তারা। এ পর্যন্ত কোন চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন আমাদের কোন শীতবস্ত্র বিতরণ করেন নাই। এ বিষয়ে সুতারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন জানান, এবার শীতের তীব্রতা অনুযায়ী কম্বল তেমন একটা পাওয়া যায় নাই।আমার এলাকায় প্রায় বিশ হাজারের মতো ভোটার আছে।সরকারি কম্বল পেয়েছি মাত্র সাড়ে ৪শত।

মধুরচর নিবাসী আকবরের সাথে কথা হলে জানান, অন্যান্য বার শীতে গরীব অসহায় মানুষদের মাঝে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও এবার নির্বাচনের কারনে তা হয়নি। ফলে অসহায় গরীব দু:খী মানুষ এখনো শীতে কষ্ট ভোগ করছে।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো জাকির হোসেন জানান, এ পর্যন্ত উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মোট ৪১০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শীত বেড়ে যাওয়ার চাহিদা অনেক। উর্ধত্বন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন