রাবিতে এক মঞ্চে ছাত্রদল-শিবির, ছাত্ররাজনীতি সংস্কারের দাবি
রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ এক মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মুক্তমঞ্চে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত ‘ছাত্ররাজনীতি সংস্কার প্রস্তাবে ছাত্র নেতৃবৃন্দের বোঝাপড়া’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তারা বক্তব্য দেন।
সভায় রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমদ রাহি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটা লক্ষ্য নিয়ে সংগঠিত হয়েছিল- সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়। ছাত্রলীগ এত বছর ছাত্ররাজনীতি বলতে বুঝিয়েছিল হল ক্যান্টিনে ফ্রিতে খাওয়া, চাঁদাবাজি করা, গেস্টরুমে ডেকে অত্যাচার করা, মতের বিরুদ্ধে গেলে তাদের ওপর হামলা করা। আমি কথা দিচ্ছি রাবি ছাত্রদল এমন কাজ কখনো করবে না। ছাত্রদল একটি বৃহৎ দলের সহযোগী সংগঠন। এটি কোনো অঙ্গ সংগঠন না। তাই ছাত্রদলের রাজনীতিতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির কোনো প্রশ্নই আসে না।
রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন বলেন, ছোটবেলা থেকে আমরা যে ছাত্ররাজনীতি দেখেছি, সেখানে আমরা দেখেছি চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, শিক্ষক নিয়োগ দেয় শিক্ষার্থী, মতের অমিল হলে অত্যাচার, নির্যাতন করা। এ রকম রাজনীতি আমিও নিষিদ্ধ চাই। তবে সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশ তুলে ধরতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরের দরকার। যেটা তৈরি করতে ছাত্র অবস্থা থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা দরকার।
তিনি আরও বলেন, যেসব কারণে আমরা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চাচ্ছি সে সব জায়গায় আমাদের সংস্কার করতে হবে। ছাত্ররাজনীতি হবে শিক্ষার্থীদের জন্য। যা শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে। একটা নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে দিয়ে চলতে হবে। এখানে কিছু বিধি বিধান থাকবে। প্রশাসন কিছু আইন প্রণয়ন করবে। ইভটিজিং, সিট বাণিজ্য করলে সে অনুযায়ী শাস্তি দিতে হবে।
স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, গত বছরগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বলতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ হল দখল করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রাখা, মতের অমিল হলে ট্যাগ লাগিয়ে অত্যাচার নির্যাতন করা দেখে এসেছি। এমনকি অসংখ্য শিক্ষার্থীকে হত্যাও করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু, গবেষণামূলক ক্যাম্পাস স্থাপন করতে। যেখানে কোনো দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য থাকবে না।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তাসিন খান বলেন, আমার পরিচয় আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী। এছাড়া আমি একজন অধিকার কর্মী। স্বৈরাচার সরকার পতনের পর একটা বড় প্রশ্ন ছিল ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি না। গত ১৫ বছরে যে ছাত্ররাজনীতি আমরা দেখেছি গেস্ট রুম, চাঁদাবাজি, অত্যাচার, নির্যাতন। এই যদি হয় ছাত্ররাজনীতি তাহলে আমরা ছাত্ররাজনীতি চাই না। যে রাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো উপকারে আসে না সে রাজনীতি আমরা চাই না।
স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম রেজার সঞ্চালনায় এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান, ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক আখতার হোসেন মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।