ডার্ক মোড
Friday, 03 May 2024
ePaper   
Logo
যেভাবে কমাবেন উদ্বেগ-হতাশা

যেভাবে কমাবেন উদ্বেগ-হতাশা

লাইফ স্টাইল ডেস্ক

উদ্বেগ বা মানসিক চাপ শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এটি ভয়ের বহিঃপ্রকাশ। কোন বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা বা বিষয়টি হলে কি হতে পারে এসব চিন্তাকেই উদ্বেগ বলে থাকে।

প্রত্যেক মানুষের জীবনে নানা রকমের চিন্তা বা সমস্যা থাকে এবং তার কারণে উদ্বেগ ও থাকে। কিন্তু উদ্বেগ অতিরিক্ত হলে শরীরে নানারকম সমস্যা বা রোগ দেখা দেয়। এমনকি মাতাতিরিক্ত উদ্বেগ মানুষকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে।

উদ্বেগের লক্ষণ

উদ্বেগের কিছু সাধারণ লক্ষণ হল,

হার্ট রেট বেড়ে যাওয়া

দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া

অস্থিরতা

মনোযোগে সমস্যা

উদ্বেগ থেকে সৃষ্ট রোগ
প্রতিটি মানুষের জীবনে নির্দিষ্ট মাত্রার উদ্বেগ থাকে। কিন্তু যখন কেউ মাতাতিরিক্ত উদ্বেগ বা চিন্তা করে তখনই নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক রোগ ঘিরে ধরে। উদ্বেগের কারণে সাধারণত যেসব রোগ দেখা দিতে পারে তা হল,

প্যানিক ডিসঅর্ডার

পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার

অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার

সেপারেশন এনক্সাইটি

ফোবিয়া

যেভাবে দূর করবেন উদ্বেগ
১. অ্যাকটিভ থাকুন, ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম শুধুমাত্র শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপয়াক্রি। ২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে উদ্বেগজনিত ব্যাধিযুক্ত ব্যক্তিরা যারা নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বা ব্যায়ামের সাথে যুক্ত ছিলেন তাদের উদ্বেগ অনেকখানি কমে গিয়েছিল।

অর্থাৎ ব্যায়াম মানুষের মনোযোগকে উদ্বেগ সৃষ্টি করে এমন কিছু থেকে সরিয়ে দিতে পারে। এছাড়া ব্যায়ামের মাধ্যমে মস্তিষ্কে অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি নিউরোকেমিক্যালের জন্য আরও জায়গা তৈরি করে।

২. অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন
গবেষণা বলে যে, দুশ্চিন্তা এবং অ্যালকোহল সেবনের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় যে অ্যালকোহল গ্রহণ কমালে উদ্বেগ এবং হতাশা দুটোই কমে যায়। ভারী মদ্যপান নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যকে হস্তক্ষেপ করে, যা ইতিবাচক মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ ছাড়া অ্যালকোহল শরীরের স্বাভাবিক ঘুমের ক্ষমতাকে ব্যাহত করে থাকে।

৩. ধূমপান ত্যাগ করা
গবেষণার তথ্যমতে, জীবনে যত তাড়াতাড়ি ধূমপান শুরু, পরবর্তীতে আপনার উদ্বেগজনিত ব্যাধি হওয়ার ঝুঁকি তত বেশি। সিগারেটের ধোঁয়ার নিকোটিন এবং অন্যান্য রাসায়নিকগুলি উদ্বেগ বৃদ্ধি করে থাকে। তাই জীবন থেকে উদ্বেগ কমাতে আগে ধূমপান বন্ধ করতে হবে।

৪. ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করুন
যদি কারও দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগজনিত সমস্যা থাকে তবে দ্রুত ক্যাফেইন গ্রহণ বন্ধ করা বা কমানো উচিত। কারণ ক্যাফেইন নার্ভাসনেস এবং খিঁচুনির তৈরি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাফেইন উদ্বেগজনিত ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে। এটির কারণে প্যানিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্যানিক অ্যাটাকও হতে পারে।

৫. রাতে ভালো ঘুম প্রয়োজন
উদ্বেগজনিত সমস্যা এড়াতে রাতে ভালো ঘুমের প্রয়োজন। তাই রাতে ঘুমানোর আগে টেলিভিশন বা ইলেকট্রনিক্স পণ্য ব্যবহার না করাই শ্রেয়। এ ছাড়া রাতে ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন, ভারী খাবার এবং ধূমপান এড়িয়ে চলুন। চেষ্টা করতে হবে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর।

৬. সুষম খাদ্যাভাস জরুরি
রক্তে কম শর্করার মাত্রা, ডিহাইড্রেশন বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের রাসায়নিক মানুষের মন মেজাজ পরিবর্তন করতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত চিনির খাদ্যও মেজাজকে প্রভাবিত করতে পারে। খাওয়ার পরে যদি আপনার উদ্বেগ আরও খারাপ হয় তবে আপনার খাদ্যাভ্যাস নিয়ে চিন্তা করুন এবং পরিবর্তন আনুন। সব সময় হাইড্রেটেড থাকুন, প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিয়ে জটিল কার্বোহাইড্রেট, ফল ও শাকসবজি এবং চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য খাওয়া উচিত।

৭. গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়্যাম করুন
অগভীর, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস উদ্বেগের লক্ষণ। তাই গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা উচিত। নাক দিয়ে গভীর শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে বড় করে প্রশ্বাসের মাধ্যমে বাতাস বের করে দেয়া হয়। এটি স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরণ পুনরুদ্ধার করতে এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

৮. ক্যামোমাইল চা পান করুন
এক কাপ ক্যামোমাইল চা হল একটি সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকার যা স্নায়ুকে শান্ত করে এবং ঘুমের উন্নতি করে। এর ফলে মানসিক উদ্বেগ থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়

৯. অ্যারোমাথেরাপি চেষ্টা করুন
অ্যারোমাথেরাপি হল একটি সামগ্রিক নিরাময় চিকিৎসা যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ ব্যবহার করে আসছে। প্রাকৃতিক গাছের নির্যাস বা এসেনশিয়াল অয়েল এর মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি করা হয়। এসেনশিয়াল অয়েলের সুগন্ধ নেয়ার মাধ্যমে উদ্বেগ কমানো হয়ে থাকে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন