মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রমাণ আছে, তবুও তালিকায় নেই আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারীর
আবু বকর ছিদ্দিক, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)
জীবনবাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করতে যারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাদেরকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান (মুক্তিযোদ্ধা) হিসেবে মূল্যয়ন করা হয়। কিন্তু এখনও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী। তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নের শিলমুদ গ্রামের বাসিন্দা।
স্বাধীনতার ৫২ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও সম্মান না পাওয়ার তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অর্ন্তভুক্তি না হওয়ায় তিনি বঞ্চিত রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে।
এ সময় তিনি বলেন, আমি ১৯৭১ সালে ১৭ বছর বয়সে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। সে সময় আমার নেতৃত্বে ৬জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ভারতে আগারতলায় ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করি।
২৭ দিন ট্রেনিং শেষে ক্যাম্পের পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছি। এরপর ফেনীতে একটি অপারেশনে যোগদান করি। সোনাইমুড়ী উপজেলার বগাদিয়ায় পাক হানাদারদের মোকাবেলা করার জন্য ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। সেই সময় পাকিস্তানিদেরকে হটিয়ে জায়গাটি আমরা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী নূর হোসেন, নূর নবী, হুমায়ুন কবিরসহ আমি একসাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই। কিন্তু সবাই বীর মুক্তিযোদ্ধা খেতাব পেলেও শুধু আমার কপালে জোটে নাই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। নিজ গ্রামের মানুষসহ উপজেলার অন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা আব্দুস সাত্তারকে মুক্তিযোদ্ধা সম্বোধন করলেও কাগজে-কলমে তার স্বীকৃতি মেলেনি স্বাধীনতার ৫২ছরেও।
জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকাভুক্ত হলেও আব্দুস সাত্তার নাম মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে লিপিবদ্ধ হয়নি। সর্বশেষে অনলাইনের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম উঠাতে জানতে না পারায় আবেদনও করতে পারেননি।
তিনি ঢাকা থেকে আসার সময় ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত মুক্তিবার্তা, গেজেট, ভারতীয় সনদসহ ডাটাবেজ ফরম হারিয়ে ফেলেছেন। আব্দুস সাত্তারের শেষ ইচ্ছে তিনি যেন বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব নিয়ে মরতে পারেন।