
মাছ কেটে জীবন চলে মনোহরদী বাজারের কুমুদ ও চন্দ্রার
মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
ছোট্ট একটি জায়গায় বটি নিয়ে বসে আছেন দুই ব্যক্তি। যারা মাছ কিনছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাছ কুটার জন্য এখানে দাঁড়াচ্ছেন। হাতে থাকা মাছ ভর্তি ব্যাগ তুলে দিচ্ছেন তাদের হাতে। ব্যাগের ভেতরে থাকা মাছগুলো সযত্নে কুটে আবার ব্যাগে ভরে দিচ্ছেন তারা। এ কাজের বিনিময়ে ত দেয়া হচ্ছে কেজি প্রতি মাত্র ১০ টাকা।
বলছিলাম নরসিংদী জেলার মনোহরদী মাছ বাজারের চন্দ্র বর্মণ (৫০) ও কুমুদ বর্মন(৬০) এর কথা। মাছ কুটা তাদের পেশা। সারাদিন বাজারে কুটাকুটি করে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার। আবার এই টাকা দিয়ে ঋণও শোধ হয়। এ জন্য প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাজারেই কাটে তাদের সময়।
পার্শ্ববর্তী গাজিপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার কামারগাঁও গ্রামে তাদের বাড়ি। তবে রাতে ঘুমানো ছাড়া সারাদিন কাটে তার মনোহরদী বাজারে। মানুষের কেনা মাছ কুটে দেয়ার কাজ করেন তারা। গৃহিণীদের স্বস্তি দেয়ার পেশা। মাত্র ১০ টাকায় এ স্বস্তি দেয়ার কর্মটি সম্পাদন করে থাকেন সকাল থেকে রাত ১০/১১ টা পর্যন্ত। যতক্ষণ বাজারে মাছ কেনাবেচা চলে ততক্ষণ চলতে থাকে কাজ।
হাটের সময় কথা বলার ফুরসত থাকে না চন্দ্রা ও কুমুদের । তারা দুজন একই পথের পথিক। আগে বাজারে মাছ বেচতেন তারা।কিন্তু কালের প্রবাহে পুঁজি হারিয়ে এখন মাছ কুটার পেশায় নিয়োজিত। মাছের ব্যবসার চেয়ে এ মাছ কুটার কাজই এখন পছন্দ বেশি। এতে পুঁজি লাগে না, লোকসানের ঝুঁকিও নেই। বাকী বিক্রির হাঙ্গামাও পোহাতে হয় না এতে। যা আয় হয় তার সব নগদ। এতে দৈনিক ৮ শত থেকে হাজার টাকা করে আয় হয় তাদের ।
কষ্টার্জিত এ টাকায় সংসার চলে। সাথে অন্যান্য ঋণের কিস্তির সুদও দিতে হয়। এমনি করে মাছ কুটার পেশায় কবে যে কেটে গেছে এক যুগেরও বেশী সময় তা নিজেরাই জানেননা।শুধু জানেন করতে হবে কাজ আর কষ্টে শিষ্টে কাটাতে হবে জীবন।