ডার্ক মোড
Wednesday, 14 May 2025
ePaper   
Logo
বরগুনায় সড়কে দুর্নীতি, জড়িতদের বিরুদ্ধে জনগণের জোড়ালো বিক্ষোভ ও হুঁশিয়ারি

বরগুনায় সড়কে দুর্নীতি, জড়িতদের বিরুদ্ধে জনগণের জোড়ালো বিক্ষোভ ও হুঁশিয়ারি

 

অলিউল্লাহ্ ইমরান, বরগুনা
 
 
দুর্নীতি, অনিয়ম আর ভেজালের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বরগুনার তালতলীর সাধারণ মানুষ। উপজেলার টিএনটি সড়কে নির্মাণকাজে ঘন ঘন অভিযোগ সত্ত্বেও ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট ও উপকরণ। এঘটনায় ‘জনগণের টাকায় ভেজাল চলবে না’, ‘দুর্নীতিবাজদের শাস্তি চাই’, ‘দুর্নীতিবাজদের আস্তানা তালতলীতে হবে না। এমন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
 
সোমবার (২১ এপ্রিল) ক্ষুব্ধ জনতা দুপুর ১২টার দিকে টিএনটি মোড়ে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
 
 
একজন প্রতিবাদী স্থানীয় বাসিন্দা ও টিভি মেকার ধীরেন চন্দ্র বলেন, “এই রাস্তা আমাদের প্রাণের সঙ্গে জড়িয়ে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এক চাপেই ইট গুঁড়ো! এটা কোনো উন্নয়ন না, এটা জনগণের সাথে নির্লজ্জ উপহাস। এটা প্রমাণ করে—কাজের নামে দুর্নীতির হোলি খেলা চলছে।”
 
গাড়িচালক সোনা মিয়া বলেন, “এই রাস্তা ভেঙে গেলে আমরা প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করবো। স্কুলগামী শিশু, অসুস্থ মানুষ—সবাই চরম ভোগান্তিতে পড়বে। এই কাজ যারা করছে তারা জনগণের শত্রু।”
 
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঠিকাদার ও কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকৌশল কর্মকর্তার যোগসাজশে চলছে এই নির্মাণ তামাশা। তারা আরও বলেন, “বারবার অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। প্রশাসন যেন চোখ বুজে আছে, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে চুপ করে আছে।”
 
তরুণ সমাজকর্মী রাসেল হাসান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দুই হাজার ৩শ মিটারের কাজ ১কোটি ৬১ লাখটাকা বরাদ্দ। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে  দ্রুত কাজটা শেষ করতে চাচ্ছে তারা। আর তাদের সহায়তায় একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে। আমরা আর মুখ বুজে থাকব না। তদন্ত যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তাহলে আমরা উপজেলা অফিস ঘেরাও করব। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ হবে।”
 
 
উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন জানান, “আমরা গতকাল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বরগুনার  সাগর এন্টারপ্রাইজকে নিম্নমানের ইট সরিয়ে নিতে নোটিশ দিয়েছি। কথা না শুনলে ব্যবস্থা নেবো।”
 
কিন্তু এলাকাবাসী এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয়। তাদের বক্তব্য, “নোটিশ নয়, এখন সময় আইনি পদক্ষেপের। জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। উন্নয়নের নামে জালিয়াতি আর বরদাস্ত করা হবে না। এছাড়াও এলাকাবাসী বলেন উপজেলা অফিস কর্তৃপক্ষ জড়িত রয়েছে। যদিও এখন নিজে বাঁচতে ঠিকাদারকে সব চাপিয়ে দিবে। তারা বলে প্রকৌশলী বা ঠিকাদার যেই হোক “তালতলীবাসীর স্পষ্ট বার্তা—দুর্নীতির জবাবদিহি চাই। প্রয়োজন হলে রাস্তাজুড়ে জনতার স্লোগানে প্রকম্পিত হবে প্রশাসন, কিন্তু দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেওয়া হবে না।” 
 
বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মেহেদী হাসান খান বলেন, তালতলীর টিএনটি সড়কের ব্যাপারে আমি অবগত রয়েছি। আমাদের টিম পরিদর্শনে গেছিলো। ওখানে ভালো ইটের সাথে কিছু খারাপ ইট আসছিল। সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে। আমরা চাই সচ্ছ কাজ হবে। এরপরও যদি খারাপ রিপোর্ট আসে তাহলে আমরা ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো। 
 
 

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন