ডার্ক মোড
Thursday, 15 May 2025
ePaper   
Logo
প্রাচ্যেরডান্ডি নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির হালচাল :   ডাঃ আইভী জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওসমান পরিবার পাতালে

প্রাচ্যেরডান্ডি নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির হালচাল : ডাঃ আইভী জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওসমান পরিবার পাতালে

 

ইমতিয়াজ আহমেদ,নারায়ণগঞ্জ 

সবাই পালিয়েছে। সারা নারায়ণগঞ্জে দৃশ্যেমান কোন আওয়ামীলীগ নেতা নেই। বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতেও ব্যতীক্রম ছিলেন ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী। নিজের হাতে গড়া প্রিয় শহরে প্রকাশ্যে বিচরণ করতেন। নিদেন পক্ষে কারো পরোয়া করতেন না। জোর গলায় বলতেন-‘আমি শহর ছেড়ে বিশেষ করে নিজের বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাব না। আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি। মানুষের জন্য কাজ করি। জনগণ না চাইলে আমি রাজনীতি করবোনা। যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে-তারা কাপুরুষ! ওরা আওয়ামীলীগ করার জন্য পালায়নি। ওরা পালিয়েছে জনগনেরটা লুটপাট করেছে বলে ‘

 এমন দৃঢ়চেতা নগরমাতা সাবেক নাসিক মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভীও আজ জেলে বন্দি জীবন যাপন করছেন। তাঁকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়াটা নিয়েও কত নাটকীয়তা হলো। ৯মে রাত ১০ টায় দেওভোগের ‘চুনকা কুটির’ এ নাটকীয়তার শুরু। প্রথম পুলিশের একটি টিম আসে। এরপর রাত ১১টায় চূড়ান্ত নাটকীয়তার মঞ্চায়ন দেখতে পায় শহরবাসী। ডাঃ আইভীর বাসার গেইটের সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। সেই পুলিশকে ঘেরাও করেছে শত শত নারী পুরুষ। জনস্রোত থেকে হ্যান্ড মাইকে ঘোষনা আসছিল ‘আমরা আমাদের মেয়রকে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে দিবনা।’

 একপর্যায়ে পুলিশের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাসায় ঢুকে ডাঃ আইভীর সাথে কথা বলেন। তাঁকে বৈষম্য বিরোধী হত্যা মামলায় গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তখন ডাঃ আইভী জানান, রাতের বেরা তিনি বাড়ির বাইরে যাবেন না। দিনের বেলা যাবেন। ইত্যবসরে জনতা ডাঃ আইভীর বাড়ির মেইন রাস্তায় লাঠিসোঠা ও বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেন। ডাঃ আইভী জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি সকালে পুলিশের সাথে যাব। আপনারা কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না।

 কিন্তু ঘটনা প্রবাহ একটু ভিন্ন ছিল। ১০ মে ভোর ৬টায় ডাঃ আইভীকে নিয়ে পুলিশ রওয়ানা দেয়। এ সময় ডাঃ আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শহরের কালিরবাজার এলাকা অতিক্রমকালে পুলিশের গাড়ি বহর লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় ২ জন পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় মামলায় আইভী সমর্থকদেরকেই ফাঁসানো হয়েছে।

এ ঘটনা প্রবাহ নারায়ণগঞ্জের আমজনতা ও সুধীসমাজে বিরাট আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সবাই এখন আওয়ামীলীগের রাজনীতি ও নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ নেতাদের পরিণতির ব্যবচ্ছেদ করছেন। সবার বিচারে ওসমান পরিবারের চেয়ে চুনকা পরিবারের সাহসীকতা ও চুনকা কণ্যা ডাঃ আইভীর সাহসীকতার কথাই শীর্ষ স্থান দখল করে নিয়েছে। একপেষে গোয়ার-গোবিন্দ মানুষের বিবেকও মাঝে মধ্যে সুস্থ বিবেচনা করে থাকে। 

 নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে উত্থান পতনের খেলায় অপ্রতিরোধ্য জনপ্রিয় নারী নেত্রী সেলিনা হায়াৎ আইভী আজ জেলে বন্দি। জেলা আওয়ামীলীগের অন্তঃদ্বন্দে কয়েক যুগ ধরে দ্বীখন্ডিত, স্থানীয় ভাষায় রেল লাইনের এপার ওপার অথবা উত্তর দক্ষিণে বিভক্ত আওয়ামীলীগ। আর এই বিভাজনের শুরুটা দেশ স্বাধীনের স্বল্প সময়ের পর থেকেই। একেএম শামসুজ্জোহা ভার্সেস আলী আহাম্মদ চুনকা থেকে শুরু।

 

বর্তমানে এ দুই পরিবারের প্রভাবশালী সদস্য সেলিনা হায়াৎ আইভী ভার্সেস একেএম শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের মধ্যে চলেছে রাজনৈতিক বোঝা পরা। নেতৃত্বের লড়াই। আর রাজনৈতিক উত্থান পতনে সর্বশেষ ক্ষমতাধর হিসেবে নেতৃত্ব স্থান দখলে রেখেছেন চুনকা কণ্যা

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন