
পল্লী কর্মসংস্থান-সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির সঞ্চয়ের চেকে গড়মিল
ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি-৩ প্রকল্পে শ্রমিকদের সঞ্চয় চেকের হিসাবে গড়মিল দেখা গেছে। চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে শ্রমিকরা বিষয়টি দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হন।
শনিবার দুপুরে ফরিদপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) কার্যালয়ের কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী মিলনায়তনে এই প্রকল্পের আওতায় মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার ২৭০ শ্রমিকের মাঝে চেক বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে তা স্থগিত রাখা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহিদুজ্জামান খান।
সরেজমিনে দেখা যায়, এলজিইডি বাস্তবায়িত এই প্রকল্পের আওতায় গত চার বছর ধরে শ্রমিকদের প্রতিদিনের বেতন থেকে সঞ্চয় হিসাবে ৮০ টাকা করে কেটে রাখা হয়। এই হিসাবে চার বছরে প্রত্যেকের ১ লাখ ১৬ হাজার ২০০ টাকা সঞ্চয় হয়েছে। যার হিসাব রাখা হয় সোনালী ব্যাংকের উপজেলা শাখাগুলোতে। সুদসহ টাকার পরিমাণ হয় ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৮৭ টাকা। কিন্তু চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে মধুখালী উপজেলাধীন শ্রমিকদের সমুদয় টাকা চেকে উল্লেখ করা থাকলেও অপর দুটি উপজেলার শ্রমিকদের চেকে তিন থেকে চার হাজার টাকা কম উল্লেখ করা হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিকরা। পরে চেক বিতরণ স্থগিত রাখা হয়।
এ সময় দেখা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের শ্রমিক পারভিন বেগমের চেকে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মধুখালী উপজেলাধীন শ্রমিকদের চেকে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৮৭ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
পারভীন বেগম বলেন, ‘আমরা একই দিনে কাজ শুরু করছি এবং একইভাবে সঞ্চয় জমা হয়েছে। একদিনও কমবেশি হবে না। তাহলে আমাদের কম কেন। আমাদের প্রাপ্য যেভাবেই হোক বুঝিয়ে দিতে হবে।’
বিলকিস বেগম নামে অপর এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের রক্ত পানি করা এই টাকা কেন কম দেবে। প্রত্যেকেই একইভাবে টাকা জমা দিয়েছি। চার বছরের প্রত্যেক মাসেই টাকা কেটে রাখা হয়েছে। তাহলে একেকজনের এক এক রকম টাকা থাকবে কেন।’
বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে জানতে চাইলে প্রকল্পটির দায়িত্বরত প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদেরও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এরপরই চেক বিতরণ স্থগিত রাখা হয়েছে। আমরা সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’ তিনি আরও বলেন, এলজিইডি থেকে সঞ্চয়ের টাকা ঠিকঠাকভাবে ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে। যদি কিছু হয় সেটা ব্যাংক করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের বোয়ালমারী উপজেলা শাখা ব্যবস্থাপক প্রতাপ কুমার দত্ত বলেন, ‘কি কারণে গড়মিল হয়েছে অ্যাকাউন্টগুলো না দেখে বলতে পারব না।’