ডার্ক মোড
Tuesday, 01 April 2025
ePaper   
Logo
নাটোরে ডিসির পুরনো বাংলোয় অস্ত্রের পর মিলল সিলমারা ব্যালট

নাটোরে ডিসির পুরনো বাংলোয় অস্ত্রের পর মিলল সিলমারা ব্যালট

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে জেলা প্রশাসকের পুরাতন বাংলোর পুকুর থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পর এবার বাঁশবাগানে পাওয়া গেছে বিপুল ব্যালট। ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এসব ব্যালটের অধিকাংশই বিভিন্ন প্রতীকে সিল মারা।

শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় সদরের কান্দিভিটা এলাকার বাংলোটির বাঁশঝাড়ের একটি গর্তে পুঁতে রাখা ব্যালটগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানান নাটোর জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) রাশেদুল ইসলাম।

এর আগে শুক্রবার পুরাতন এই বাংলোর পুকুরে পাওয়া গিয়েছিল চারটি শটগানসহ ছয়টি অস্ত্র। শনিবার অস্ত্রের সন্ধানে চলমান অভিযানের মধ্যেই ব্যালট পেপারগুলো গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের নজরে আসে। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেগুলো উদ্ধার করে।

 

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের প্রায় ১০০ বস্তা ব্যালটে বিভিন্ন প্রতীকে সিল মারা দেখা গেছে। পাশাপাশি বাতিল কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, টেলিফোন, সিলগালা করার উপকরণ ও ভোটার তালিকাও উদ্ধার করা হয়েছে। 

 

এনডিসি রাশেদুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের এই পুরাতন বাংলোয় এখন আর কেউ থাকে না। বাংলোটা দেওয়াল দিয়ে ঘেরা থাকলেও চারদিক দিয়ে ঢুকে পড়া যায়। এখানের রুমগুলোর অনেকগুলোতেই তালা নেই।উদ্ধার হওয়া ব্যালট নিয়ে তিনি বলেন, “ব্যালটগুলো প্রথমে আমাদের ট্রেজারিতে রাখা ছিল। কিন্তু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় স্থান সংকুলান না হওয়ায় ব্যালটগুলো এই পুরোতন বাংলোতে রাখা হয়। সেখান থেকে এই ব্যালটগুলো কে বা কারা এখানে এনে নষ্ট করেছে, তা এখনও আমরা জানতে পারিনি।”

ব্যালটগুলো ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের জানিয়ে তিনি বলেন, “এই ব্যালটগুলো রাখার নিয়ম হচ্ছে ছয় মাস, ছয় মাসের মধ্যে কোনো মামলাও হয়নি কোনো অনুসন্ধানও হয়নি। সেহেতু আমরা এগুলো এখানে এনে সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম।

“নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এই ব্যালটগুলোর টেন্ডারও হয়ে গেছে এবং বাকি ব্যালটগুলো নিয়েও গেছে। আর কিছু ব্যালট নষ্ট করা হয়েছে।”

 

এখানে ‘জালিয়াতির কোনো প্রশ্ন নেই’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নাটোরের কোনো আসনেই কোনো মামলা নাই। এই ব্যালটগুলোও পুরাতন, কোনো কাজ নেই।”

জেলা প্রশাসনের ওই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “অন্য যে ডিভাইসগুলো ছিল সেগুলোও আমাদের ডিসি অফিসের, যেগুলো এখানে ফেলে রাখা হয়েছিল।”

  

এর আগে শুক্রবার এই ডাক বাংলোর পুকুর থেকে চারটি শটগান, একটি দোনলা বন্দুক এবং একটি এয়ারগান উদ্ধার করে পুলিশ।

 শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানান নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী।

তিনি বলেন, সকালে দুজন ছেলে পুকুরটিতে মাছ ধরার সময় তাদের বড়শি আটকে যায়। তারা পানিতে নেমে দেখে একটি কম্বলের সঙ্গে বড়শি আটকে গিয়েছে। সেটি তুলে আনলে ভেতরে একটি দোনলা বন্দুক এবং একটি এয়ারগান পায় তারা।

বিষয়টি তারা পুলিশকে জানায়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দিয়ে পুকুর খুঁজে দুটি হাতল ছাড়া এবং দুটি হাতলসহ মোট চারটি শটগান উদ্ধার করে। পরে পুকুর সেচে অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরও কিছু রয়েছে কিনা তা তল্লাশি করে দেখা হবে।

 

এক প্রশ্নের জবাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এই অস্ত্রের নম্বরগুলো মিলিয়ে দেখা হবে, যে এগুলো পুলিশের ছিনতাই হওয়া অস্ত্র নাকি সাধারণ মানুষের নিবন্ধিত। বিভিন্ন থানায় ম্যাসেজ দিয়েও এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করা হবে।”

অস্ত্র উদ্ধারের পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন নেলী।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে জাল টেনে পুকুরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া পুকুরটির পানি সেচার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান নাটোর সদর থানার ওসি মাহাবুর রহমান।

 

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন