ডার্ক মোড
Thursday, 12 September 2024
ePaper   
Logo
ড. ইউনূসের নতুন নির্বাচন মিশন

ড. ইউনূসের নতুন নির্বাচন মিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্যারিসে অবস্থানরত শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে আদা-জল খেয়ে নেমেছেন। তিনি এখন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বাংলাদেশের নতুন নির্বাচনের দাবি করেছেন। তিনি সরাসরি পুলিশ গুলি করেছে এমন অসত্য, ভিত্তিহীন, মনগড়া অভিযোগ উত্থাপন করে প্রকারান্তরে সরকারের পতন চাইছেন। তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকার এবং চিঠিপত্র এখন আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। বিশেষকরে ড. মোহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বিদেশি রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি একাধিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশে একটি নতুন নির্বাচনের দাবি করেছেন। এই নতুন নির্বাচনের ফর্মুলা কি এবং এই নতুন নির্বাচন কেনো প্রয়োজন ইত্যাদি বিষয়েও তিনি গণমাধ্যমে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কথাবলেছেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চিঠি এবং আলোচনাগুলো এক করলে দেখা যায় যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্বাচন মিশনের কয়েকটি ধাপ রয়েছে।

প্রথমত, তিনি একটি জাতীয় ঐক্যমতের কথা বলেছেন। সেই জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন এবং একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দাবি করেছেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা কিহবে সে সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেননি।

দ্বিতীয়ত তিনি বলতে চেয়েছেন, নির্বাচন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে এবং সকলের অংশগ্রহণে এই নির্বাচন যেন হয় সেই ব্যাপারে একটি সংলাপ আয়োজনের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেছেন।

তৃতীয়ত, জুলাই মাসে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে তাণ্ডব এবং নাশকতা সৃষ্টি হয়েছে সেখানে তিনি একপাক্ষিক অবস্থান গ্রহণ করেছেন। এজন্য তিনি পুরোপুরিভাবে সরকারকে দায়ী করেছেন। অথচ এর সঙ্গে যে জামায়াত, শিবির এবং অন্যান্য গোষ্ঠীর সম্পৃক্ত ছিল সেই বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গেছেন।

চতুর্থত, এই ঘটনায় তিনি পুলিশ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, পুলিশ দেখা মাত্র গুলি করেছে। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন ভিডিওচিত্র এবং তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাস্তবে এধরনের ঘটনা ঘটেনি।

পঞ্চমত, তিনি সরকারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন।

ড. মুহাম্মদের ইউনূসের এই ফর্মুলা বিশ্লেষণ করলে সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন এবং একটি অন্তবর্তীকালীন অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার একটি নীলনকশা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রণয়ন করেছেন। বিএনপি-জামায়াত যে দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছিল অর্থাৎ নির্দলীয় নিরপেক্ষ, তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেরকম একটি ফর্মুলাই ড. মুহাম্মদ ইউনূস দিয়েছেন।

অনেকেই মনে করেন, তত্বাবধায়ক সরকারের বাতিল হওয়া ফর্মূলাকে এই সুযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাজারজাত করতে চাইছেন। আর এই কারণেই তিনি নতুন নির্বাচনের মিশনে গেছেন। অর্থাৎ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নতুন নির্বাচন মিশন ভালোভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তিনি আসলে সরকারের পদত্যাগ চাইছেন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন