জাহাজে সাত খুন : রিমান্ড শেষে কারাগারে ইরফান
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে সারবাহী জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান ৭ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালত পুনরায় তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে চাঁদপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল আলমের আদালতে ইরফানকে হাজির করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময় জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে আদালত থেকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় চাঁদপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) কহিনুর বেগম বলেন, আসামি ইরফানকে ৭ দিনের রিমান্ডে তদন্তকারী কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। তাকে আদালতে হাজির করার পর বিচারক জবানবন্দি নিয়েছেন। আসামি খুনের ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করেছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। আমাদের আইন কর্মকর্তারা সরকারকে সহযোগিতা করছেন এবং সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তবে আদালতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে র্যাব-৬ এর সহযোগিতায় র্যাব-১১ কুমিল্লা অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করে।
ওইদিন দুপুরে আসামিকে র্যাব-১১ কুমিল্লায় নিয়ে আসে। সেখানে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান র্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন। এছাড়া ২৪ ডিসেম্বর রাতে এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় হাইমচর থানায় অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে আসামি করে মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ।
২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চাঁদপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা নৌপুলিশের পরিদর্শক মো. কালাম খান আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালতের বিচারক মুহাম্মদ ফারহান সাদিক ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর মাঝেরচরে নোঙর করে রাখা সারবাহী জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- জাহাজের মাস্টার ফরিদপুর সদরের জোয়াইর গ্রামের গোলাম কিবরিয়া (৬৫), তার ভাগনে লস্কর শেখ সবুজ (৩৫), সুকানি নড়াইলের লোহাগড়ার আমিনুল মুন্সী (৪০), লস্কর মাগুরার মহম্মদপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৭), একই এলাকার সজিবুল ইসলাম (২৬), ইঞ্জিন চালক নড়াইল লোহাগড়া এলাকার সালাউদ্দিন মোল্লা (৪০) এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার বাবুর্চি রানা (২০)। এছাড়া আহত সুকানি জুয়েল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগে চিকিৎসাধীন।