জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (৫২ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের স্বশরীরে ক্লাস শুরু করাসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- ভর্তি পরীক্ষায় বিতর্কিত শিফট পদ্ধতি বাতিল করে পরীক্ষা পদ্ধতির সার্বিক বিষয় সংস্কার করা এবং ২০২৩-২৪ (৫৩ ব্যাচ) শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা দ্রুত অনুষ্ঠিত করা।

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিব জামানের সঞ্চালনায় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ হলো গবেষক তৈরি করা, শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা, শিক্ষার মান উন্নত করা। কিন্তু প্রশাসন তাদের অর্থ উপার্জন নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রকল্প ও বাজেট কেন্দ্রীক বিষয়গুলোতে প্রশাসন খুবই সক্রিয়।

তাদের ফন্দি শুধু পারে বাজেট থেকে অর্থ উপার্জন করা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে যাদের জন্য বাজেট দেওয়া হয়, প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, প্রশাসনিক কাজ করা হয় সেই প্রধান অংশীজন শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যাথা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তিতে দেড় কোটি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় প্রশাসন ৫২ ব্যাচের ক্লাস অনলাইনে শুরু করেছে। যা খুবই নিন্দাজনক।’

ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘প্রশাসনের মাথায় শুধু আসে কিভাবে গাছ কেটে যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করা যায় এবং বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কিভাবে লুটপাট করা যায়। কিন্তু তাদের মাথায় এটা আসে না যে কিভাবে নবীণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে এনে স্বশরীরে ক্লাস নেওয়া যেতে পারে, কিভাবে গণরুম উচ্ছেদ করা যেতে পারে অথবা কিভাবে অছাত্রদের হল থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে। প্রশাসন মদবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহতের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে, ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে মিলে সকল শিক্ষার্থীর গলা চেপে ধরার ক্ষমতা রাখে কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার মানোন্নয়নের ক্ষমতা রাখে না।

প্রশাসন ভর্তি পরিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মেধার মূল্যায়ণে শিফট পদ্ধতি নিয়ে আসে। বারবার সেটি বাতিলের দাবি জানালেও প্রশাসন আশ্বাস দিয়ে তা আর বাস্তবায়ন করে না। আমাদের দাবি এই বিতর্কিত শিফট পদ্ধতি বাতিল করা হোক, নতুন হলগুলো চালু করে দ্রুত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস স্বশরীরে শুরু করা হোক এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ৫৩ ব্যাচের ভর্তি পরিক্ষার ব্যবস্থা করা হোক।’

সাংস্কৃতিক সংগঠন চিরকুটের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান লাবিব বলেন, ‘ এই প্রশাসন যথাযথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সদিচ্ছাও অভাবের পরিচয় দিচ্ছে। তারা হলে আবাসন সংকটের কথা বলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস শুরু করে বাসায় বসিয়ে রাখছে। কিন্তু তারা হল থেকে অছাত্রদের বের করে আবাসন সংকট নিরসন করছে না। কারণ সামনের নির্বাচনে লাঠিয়াল বাহিনি তৈরিতে ভূমিকা রাখা। এজন্য তারা ক্ষমতাসীন অছাত্রদের প্রশ্রয় দেয়। প্রশাসনের উচিত সকল বিষয় সমন্বয় করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সচেষ্ট হওয়া। কিন্তু এই প্রশাসন পাঠদান ছাড়া বাকি সবকিছু করে।