ছাত্র বিক্ষোভ: সংঘর্ষের পর ইম্ফল ছেড়ে আসামে গেলেন মণিপুরের গভর্নর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত। এর মধ্যেই রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল ছেড়ে আসামের গুয়াহাটিতে গেছেন মণিপুরের গভর্নর লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য।
রাজ্যটিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার একদিন পর ইম্ফল ছাড়লেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট নাউ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর ছাত্র এবং তাদের সমর্থকরা রাজভবনের দিকে যাত্রা করার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলেন। আর সেই ঘটনার একদিন পর বুধবার মণিপুরের গভর্নর লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য আসামের গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল ত্যাগ করেন।
এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্নাতকোত্তর এবং স্নাতক স্তরের সমস্ত পরীক্ষা স্থগিত করেছে মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি বলেছে, পরীক্ষার পুনঃনির্ধারিত তারিখ শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
নর্থইস্ট নাউ বলছে, লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য মণিপুরের পাশাপাশি আসাম রাজ্যেরও রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
গত মঙ্গলবার রাজভবন অভিমুখে মিছিল করার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। রাজ্যের পুলিশ প্রধান এবং মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা রাজভবনের দিকে মিছিল নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করেছিল।
একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৫৫ জনেরও বেশি ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
অবশ্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এনই জানিয়েছিল, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ১০০ জন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এই ঘটনার পর রাজ্যপাল আচার্য একই রাতে ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেন।
এদিকে মণিপুরে চলমান জাতিগত সংঘাত মোকাবিলায় দেশটির কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর (সিআরপিএফ) সদস্যদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। মণিপুর থেকে আসাম রাইফেলসের দু’টি ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কয়েকদিন পর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার সহিংসতায় বিধ্বস্ত রাজ্যটিতে সিআরপিএফের ২ হাজার সদস্যের দু’টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এছাড়া ভারতীয় দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিআরপিএফের নতুন এই দুটি ইউনিটের সব কোম্পানিকে মণিপুরের বিভিন্ন অংশে ঘাঁটি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। প্রত্যেক ইউনিটে পাঁচ থেকে ছয়টি কোম্পানি রয়েছে। দু’টি ব্যাটালিয়নে সিআরপিএফের প্রায় ২ হাজার জওয়ান ও কর্মকর্তা রয়েছেন।