চাঁদপুরে জাহাজে সাত জন খুনের ঘটনায় জড়িত আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান গ্রেফতার
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচরে মেঘনা নদীতে সার বহনকারী এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত জন খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান (২৬) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়টি জানিয়েছেন র্যাব-১১ কুমিল্লার উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১ এর সদস্যরা। ইরফান বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি হ্যান্ড গ্লাভস,ব্যাগ,ঘুমের ওষুধের খালি পাতা,খুন হওয়া ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোনসহ সাতটি মোবাইল ফোনসহ রক্ত মাখানো একটি জিন্স প্যান্ট উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কর্মকর্তা মেজর সাকিব হোসেন জানান,দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে আকাশ মণ্ডল ইরফান জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াসহ সবাইকে হত্যা করেন। র্যাব জানায়,জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কোনো প্রকার বেতন-ভাতা দিতেন না এমনকি তিনি দুর্ব্যবহারও করতেন। এসবের ক্ষোভ থেকে আকাশ মণ্ডল ইরফান সবাইকে হত্যা করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান জানান,জাহাজের বাজার করা ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে তিনি ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি আগেই জাহাজেই ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল।
র্যাব দাবি করে বলে, ইরফান প্রথমে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সবাইকে অচেতন করে। পরে হাতে গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজে জাহাজ চালিয়ে চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় এসে অন্য একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যান।
র্যাবের ভাষ্য,মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার সময় অন্যরা দেখে ফেলায় ইরফান তাদেরও হত্যা করেন।
উল্লেখ্য,সোমবার ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ঈশানবাল খালের মুখে নোঙর করে রাখা সারবাহী জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে আরও দু’জন মারা যায়। তাদের সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। কারও কারও ছিল গলাকাটা।
খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন: মাস্টার গোলাম কিবরিয়া,গ্রিজার সজিবুল ইসলাম,লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী।
এছাড়া আহত ব্যক্তি হলেন সুকানি জুয়েল। আর গ্রেফতার আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান জাহাজের বাজার করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।