আমাদের যে অভিজ্ঞতা, দেশের যে অভিজ্ঞতা, সেটা হেনস্তার অভিজ্ঞতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমাদের যে অভিজ্ঞতা, দেশের যে অভিজ্ঞতা, সেটা হলো হেনস্তার অভিজ্ঞতা। অপমান, অবমাননার অভিজ্ঞতা। আমরা নাগরিক হিসেবে যে দাবি আছে, অধিকার আছে, সেটা ভুলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। নতজানু হওয়ার অভিজ্ঞতা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানরা প্রতিবেদন হস্তান্তর করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের চেয়ারম্যান এবং কমিশনের সব সদস্যকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। দুটি কমিশন সংস্কার হলে, এটা এমন জিনিস, বাংলাদেশের এমন কোনো নাগরিক নেই যে এটাতে টাচ করে না। অন্য কমিশনের বড় বড় জিনিস থাকতে পারে, কিন্তু সরাসরি টাচ করে না। তবে এই দুটির সঙ্গে আপনাকে সম্পৃক্ত হতে হবে।
তিনি বলেন, তারা এখানে যে আশার কথা শুনিয়েছেন, এটা আমাদেরকে আশা জাগায়। হয়তো আমার এটা থেকে মুক্ত হব। আমরা সত্যিকারভাবে নাগরিক হিসেবে অধিকার ফিরে পাব। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আপনাদের এই রিপোর্টের মাধ্যমে প্রত্যাশা পূরণ হোক। আপনাদের রিপোর্ট সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট হিসেবে জনগণের হাতে দিয়ে দেব, রাজনৈতিক দলের হাতে দিয়ে দেব, সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের কাছে দিয়ে দেব, যাতে করে তারা একমত হতে পারে যে, এগুলো করে ফেলা ভালো। আমরা মাথা নাড়ছি, মানে ভালো লাগছে, সবাই যেন এভাবে মাথা নাড়ে। সবাই যেন বলে যে ঠিক কথা বলেছেন। এটা বোঝার জন্য পণ্ডিত হতে হবে না, কারণ আমরা তো ভুক্তভোগী। সংবিধান নিয়ে পণ্ডিত হতে হবে, এখানে পণ্ডিত হতে হবে না। আশা করি এটা সবাই গ্রহণ করবে এবং বাস্তবায়ন করবে।
এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় পুস্তক জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটা থেকে যাবে। আমরা কি করলাম, না করলাম, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এটা দিয়ে আমাদের বিচার করবে। এটা জাতির জন্য একটা স্মরণীয় বিষয়। জাতি যেদিকে যাক না কেন এটা রেফারেন্স থেকে যাবে।
সংস্কার কমিশন যেটা করল সেটা শুধু বাংলাদেশের জন্য অবদান না বিশ্বের জন্য অবদান। কারণ সব জাতিকে একটা ফেস করতে হয়। যারা চিন্তা করবে যে আমাদের কি কি বাদ গেল, তারা এটা পড়ার পর বলতে পারবে যে, আমাদের তো এটা করতে পারতাম। আমার একটা অনুরোধ থাকবে যে, এটার ইংরেজি করা। বিশ্বের দরবারে যেতে গেলে বিশ্বের ভাষা নিয়ে আসতে হবে। আপনার যে কষ্ট করেছেন সে কষ্টের ফসলটা সারা পৃথিবী প্রাপ্য। আজকে যে দুইটা ভলিউম গ্রহণ করছি, সেটা জাতির সম্পদ এবং পৃথিবীর সম্পদ হিসেবে গ্রহণ করলাম, বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রতিবেদনগুলো হস্তান্তর করেন।
গত ৮ আগস্ট সরকার গঠন করার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতের সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে গত ১৫ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে রিপোর্ট জমা দেয়।