
টিটুর পরিবারে এখন শোকের মাতম
বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
ঢাকায় ধানমন্ডিতে কাজে বের হওয়ার সময় গুলিতে নিহত প্রাইভেটকার চালক মো: টিটু হাওলাদার (৩৫)‘র পরিবারে এখন শোকের মাতম বইছে।
টিটু হাওলাদার বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম হাওলাদারের ছেলে। মা নেই। স্ত্রী আয়েশা বেগম। টিটু ও আয়েশা দম্পতির বড় মেয়ে মোসা: তানজিলার বয়স ১০ বছর, ছেলে সাইমুন সাত বছর ও ছোট্র মেয়ে তামান্নার বয়স চার মাস। তিনি ঢাকার ধানমন্ডির গ্রীণ লাইফ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের অধীনে প্রাইভেটকার চালাতেন।
বাবাকে হারানো তার শিশুদের কান্না দেখে আশে-পাশের মানুষগুলোও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি কেউ। সন্তান হারিয়ে পাগল প্রায় বাবা আব্দুর রহিম হাওলাদার। স্ত্রী আয়েশা বেগম তিন শিশু সন্তান নিয়ে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে।
বড় মেয়ে তানজিলা বাড়ির কাছেই আনোর জলিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ও মেঝ ছেলে সাইমুন স্থানীয় বয়াতি বাড়ী কওমী মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবা, স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তানদের বাড়ীতে রেখে টিটু হাওলাদার একা কর্মস্থলে থাকতেন।
টিটু হাওলাদারের রিক্সা চালক বাবা আব্দুর রহিম হাওলাদার এখন বয়সের ভারে বৃদ্ধ। আর টিটুর চার ভাই বোনের মধ্যে মো: ইমরান হোসেনও রিক্সা চালিয়ে চলে। বলতে গেলে এখন মানুষের দান-দক্ষিণায় চলে টিটু পরিবারের জীবিকা। বিবাহিত বড় বোন রুমেনা বেগম (৩৫) থাকেন স্বামীর সংসারে আর ছোট বোন ফাতিমা আক্তার (১৮) প্রতিবন্ধী হওয়ায় বসবাস করেন একই সংসারে।
টিটু হাওলাদারের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, টিটু গত ১১ জূলাই বাড়ী থেকে কর্মস্থল ঢাকায় যান। এরই মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে ফোন করে তাদের এক নিকট আত্মীয় জানান, তোমার স্বামীর গায়ে গুলি লেগেছে। বিনা অপরাধে তাকে জীবন দিতে হলো। আমি অবুঝ সন্তানদের কী বুঝ দেব? ’
বৃদ্ধ বাবা আব্দুর রহিম হাওলাদার বলেন,‘এই ছিলো আমার ভাগ্যে? আমার বুকের ধন শ্যাষ। আমি আর এ্যাহন বেঁচে থেকে কি লাভ?।’
গত রোববার রাতে টিটু হাওলাদারের ফুফাতো ভাই মো: রাকিব লাশ নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে আসেন। ঐ দিন রাতেই জানাজা শেষে স্থানীয়ভাবে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?