
হাতিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ত্রুটি, দিন-রাত লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগ
হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উপজেলার সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। দিনের বেলায় যেমন, রাতেও একনাগাড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
এতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও প্রস্তুতিতে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ ছিল না। মাঝেমধ্যে ১০-১৫ মিনিটের জন্য এলেও পুনরায় চলে যাচ্ছিল।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আবহাওয়া ভালো থাকা সত্ত্বেও লোডশেডিংয়ের কোনো সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেকেই রাতে হাতিয়া বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েও দেখেন, নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস অন্ধকারে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উৎপাদন কেন্দ্রে ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে পুরো উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
সরকার হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়ার জন্য ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। দুই ধাপে ৬৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটির পরিচালনায় রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দেশ এনার্জি। শুরুতেই একাধিকবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।
হাতিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইব্রাহীম (৫০) বলেন, “এইচএসসি পরীক্ষার শুরু থেকে লোডশেডিং বেপরোয়া। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনায় মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। কোনো সময়সূচি নেই। কখন আসবে, কখন যাবে তা বোঝা যায় না।”
হাতিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, “উৎপাদন দেশ এনার্জির নিয়ন্ত্রণে। আমরা তাদের কাছে পুরোপুরি জিম্মি। তারা ইঞ্জিন বন্ধ রাখলে আমাদের কিছু করার থাকে না।”
দেশ এনার্জির হাতিয়া কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ রহমান জানান, “জ্বালানি তেলের সংকট ও ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। মেরামতের কাজ চলছে, আশা করছি দুই-এক দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হবে।”
অবশ্য বিদ্যুৎ না থাকায় এই গরমে পানি সরবরাহও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী অভিভাবকরা।