
লাকসামে লক্কর—ঝক্কর পরিবহনের দখলেই শহরের প্রধান সড়কগুলো
মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা
কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার সর্বত্র এবং ঐতিহ্যবাহী বানিজ্যিক নগরী লাকসাম, বরুড়া ও
নাঙ্গলকোট পৌরশহরের অধিকাংশ সড়কগুলো নিবন্ধনহীন নানাহ পরিবহন দখল রাজত্বে পথচারীদের জনচলাচল মারাত্মক
ঝুকিতে পড়েছে। সড়কগুলোতে যানজটের অন্যতম কারন নির্ধারিত ষ্ট্যান্ড কিংবা যত্রতত্র নানাহ পরিবহনের দৌরাত্ব। এতে করে
স্থানীয় প্রশাসন যেন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এছাড়া সবগুলো সড়কে নিরবে চাঁদাবাজি চলছে। স্থানীয়
প্রশাসন যেন নিরব দর্শক। এবার রমজান ঈদের সবকয়টি পরিবহনে ভাড়া বাড়তি হারে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট সেক্টর গুলো।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চলের সবকটি উপজেলার সর্বত্র যোগাযোগের ক্ষেত্রে নানাহ পরিবহন
ব্যবস্থাই সড়কপথে যান চলাচলে মারাত্বক অন্তরায় সৃষ্টি করে চলেছে। উপজেলাগুলোর শহরের উপর দিয়ে দেশের রাজধানী সহ
বিভিন্ন জেলার সাথে সড়ক পথই একমাত্র মাধ্যম। এ অঞ্চলের সাথে বিভিন্ন আন্তঃজেলা সড়ক ও সংযোগ সড়ক পথ গুলো
বিভিন্ন সমস্যার শিকারে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা অবর্ননীয় দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জেলা দক্ষিনাঞ্চলের
৫টি উপজেলার সড়ক পথগুলো ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক সেন্টিকেটের নিয়ন্ত্রনে, চাঁদাবাজি, পকেটমার, মাদক সেবীদের
দৌরাত্ব, বখাটে মাস্তানের আড্ডা, নিম্নমানের অনুমোদনহীন লক্কর—ঝক্কর মার্কা নানাহ গাড়ী চলাচল, যাত্রী ছাউনি ও
নির্ধারিত কোন টার্মিনাল কিংবা পরিবহন স্টান্ড বলতে কিছুই নেই। বিশেষ করে অভিজ্ঞ কোন ড্রাইভার হেলপারসহ
বিভিন্ন সমস্যা বিদ্যমান। অনেক যানবাহনের কোন বৈধতা—রুট পারমিট নেই।
সূত্রগুলো আরও জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চল ৫টি উপজেলার প্রধান ও পাশ্ববতীর্ সড়ক ঢাকা—চাঁদপুর, ঢাকা— চট্রগ্রাম
ও ঢাকা—নোয়াখালী সড়ক অতিক্রম করেছে বলে এ অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম। উপজেলাগুলোর প্রধান প্রধান সড়ক পথ গুলোর
সাথে শাখা লাইন সড়ক গুলোর মধ্যে লাকসাম— চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম—চাঁদপুর, লাকসাম—মনোহরগঞ্জ, লাকসাম—কুমিল্লা ও লাকমাম— নাঙ্গলকোট, লাকসাম—কাশিনগর সড়কগুলোর সমস্যা আরো প্রকট। জেলা সদরের সাথে আশে পাশে উপজেলার হাট বাজারের সড়ক গুলো—তো আছেই। উল্লেখিত সড়ক গুলোতে লক্কর—ঝক্কর মার্কা ও পরিবেশ দোষন যুক্ত যত্রতত্র বিভিন্ন ধরনের ফিটনেস বিহীন যানবাহন চলাচল, যাত্রী হয়রানী, সরকারী নিধার্রিত ভাড়ার চেয়েও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, মালামাল পরিবহনে বাস শ্রমিক ও স্থানীয় লেবারদের দৌরাত্ব অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার উপর স্থানীয় মাস্তানদের অবাধ দৌরাত্ব তো আছেই যা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্থানীয় একাধিক আইন ও পরিবেশবিদদের সূত্র জানায়, সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত
পিটিশান নম্বর ৯১৬/২০১৯ এর অন্তরবতীর্কালীন আদেশে মাত্রাতিরিক্ত কালোধেঁায়া নিঃসরনকারী মোটরজান সমূহ
চিহ্নিত করে আটক করার বিষয়ে একটি নির্দেশনা প্রদান করলেও জেলা বি.আর.টি.এ কতৃর্পক্ষ সহ স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে নীরব দর্শক। বিশেষ করে কালো ধোঁয়া নিঃসরনকারী মোটরজান রাস্তায় চলাচল থেকে বিরত থাকতে এবং ওইসব মোটরজান সড়কে চলাচল করলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মোটরজান এবং চালক কিংবা মালিকের বিরুদ্ধে সড়ক
পরিবহন আইন ২০১৮ এর ধারা মতে ৮৯ মোতাবেক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে কিন্তু এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের দায়িত্বহীনতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এখন এ অঞ্চলের জনমনে।
অপরদিকে ওই সড়কে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ও মালামাল পারাপার করছে অনেক পুরানো জরাজীর্ণ ও লক্কর ঝক্কর
বিভিন্ন পরিবহন। এসবের মধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবহন প্রায় ৩০/৩৫ বছর ধরে বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। এতে এলাকার
পরিবেশ ও জন চলাচল অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি বিধি—বিধান মতে ওইসব ঝঁকিপূর্ন
পরিবহনগুলো আর কত বছর চলাচল করতে পারবে তা কিন্তু মোটরজান সহ কোন আইনে প্রমান নেই। ওইসব পরিবহন চলাচলে
এলাকার পরিবেশ ও জানমাল ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকা করছেন এলাকার মানুষ। রাস্তার রাজারা সরকারি নিয়মনীতি, বিধি
বিধান রহস্যজনক কারনে মানছে না। বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের কারনে গ্রামের সংগে শহরের যোগাযোগ আজ
সহজসাধ্য হওয়ায় গ্রামাঞ্চলে উৎপাদিত বিভিন্ন পন্য শহরের ক্রেতাদের কাছে কম সময়ে স্বল্প ব্যায়ে সরাসরি পৌছানো
যাচ্ছে। এতে পন্যের ভালো দামসহ আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের সকল পেশার মানুষ বলে অভিমত অনেকের। তবে
অনেক ক্ষেত্রে ওইসব মানহীন মোটরযান অন্তরায় সৃষ্টি করে চলেছে।
এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া
সম্ভব হয়নি।