ডার্ক মোড
Sunday, 01 June 2025
ePaper   
Logo
রাবিতে হামলায় ‘ছাত্রশিবির’, সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিন্দা

রাবিতে হামলায় ‘ছাত্রশিবির’, সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিন্দা

রাবি সংবাদদাতা

জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে ‘বেকসুর’ খালাসের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিলের সময় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কিছু শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (২৯তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা বুধবার এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান।

মঙ্গলবার রাত ৮টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বর ও পরিবহন মার্কেটের সামনে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে’ ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ বাম ছাত্র সংগঠনগুলো মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের অভিযোগ। এই সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন।

পরদিন বুধবার দুই পক্ষই ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে করে একে অপরের উপর হামলার অভিযোগও এনেছেন।

তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে বলেন, “২৭ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এটি ছিল একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা, যা ক্যাম্পাসের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার সুস্পষ্ট অপচেষ্টা। এ ছাড়া ২৮ মে চট্টগ্রামে একটি কর্মসূচিতেও নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে জুলাই আন্দোলনের কর্মী এনি চৌধুরী, দীপা ও রিপাসহ কয়েকজন আহত হন হয়েছেন।”

শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “সম্প্রতি মতের অমিল হলেই কাউকে ‘শাহবাগী’ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা সরাসরি হেনস্তা করা হচ্ছে। এই ট্যাগিং রাজনীতিকে আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি মনে করি।”

তারা অভিযোগ করেন, “হামলার ভিডিও চিত্র থাকলেও কিছু সংবাদমাধ্যম ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে, যা সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে তারা এই মিডিয়া ট্রায়ালের তীব্র নিন্দাও জানান।

এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী পুশরাম চন্দ্র বলেন, “বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনে আমরা দেখেছি যে, ভিন্ন মত পোষণ করলেই মানুষকে নানা ট্যাগ দিয়ে হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হয়নি। জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সেই রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে আনলেও বর্তমানে আবারও মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সম্প্রতি রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন হামলার ঘটনা সেই প্রমাণ বহন করে, যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি আমরা।”

তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছরের মিডিয়া কাভারেজেও দেখা গেছে, অনেক গণমাধ্যম ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ পরিবেশন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনায়ও কিছু পত্রিকা ঠিক সেই কাজই করেছে। সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি।”

একই বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমাদের চাওয়া ছিল একটি সহাবস্থানমূলক, স্থিতিশীল পরিবেশ। সেই সময় সবাই মতাদর্শগত পার্থক্য ভুলে ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার ট্যাগিং রাজনীতি ফিরে এসেছে। ‘শাহবাগী’ ট্যাগ দিয়ে হামলার বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বামদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে শিবিরের হামলা এবং নারী শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর লাথির ঘটনা আবারও সহিংস রাজনীতির চিত্র তুলে ধরেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন