মির্জাপুরে নদী ভাঙ্গনের ফলে হুমকির মুখে বরাটী উচ্চ বিদ্যালয়
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে লৌহজং নদীর দুই পাড়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাটী নরদানা বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় (বিএনবি উচ্চ বিদ্যালয়)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) লৌহজং নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা গেছে ভাঙ্গনের দৃশ্য। এছাড়া বিলীন হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বিপাকে পড়েছে বহু পরিবার।
ভাতগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজাহারুল ইসলাম এবং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডিএ মতিন জানান, ধলেশ্বরী ও যমুনা নদীর শাখা নদী লৌহজং নদীর দুই পাড়ে এ বছর ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙ্গেনে বেশী হুমকির মুখে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাটী নরদানা বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে বেশ কয়েকটি পাকা ভবনসহ জমি ও গাছপালা নদীতে গর্ভে চলে গেছে। এভাবে ভাঙ্গন অব্যবহৃত থাকলে অল্প দিনের মধ্যে বিদ্যালয়টি বিলীন হতে পারে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জুলহাস উদ্দিন ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আবু সাইদ মিয়া জানান, শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা ঝুঁকিতে আছেন। নদী ভাঙ্গন থেকে বিদ্যালয়কে রক্ষার জন্য উত্তর পাশে দ্রুত ব্লক দিয়ে গাইড বাঁধ নির্মাণসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন।
এদিকে লৌহং নদীর ভাঙ্গনে মাঝালিয়া হাট ও বাজার, বরাটী উচ্চ বিদ্যালয়, বরাটী হাট ও বাজার, বরাটী হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বাগজান প্রাথমিক বিদ্যালয়, উফুলকী, দেওহাটা, কোর্ট বহুরিয়া, বহুরিয়া, কামারপাড়া, নাগরপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা নদী ভাঙ্গনে বহু পরিবার দিশেহারা হয়ে পরেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্রিজ, কালভার্ট ও রাস্তা-ঘাট ফসলি জমি। লৌহজং নদীর গুনটিয়া ব্রিজ, বরাটি এলাকায় বাবু দুঃখীরাম রাজবংশী ব্রিজ, পুষ্টকামুরী ব্রিজ, পাহাড়পুর ব্রিজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নুরু ব্রিজ এবং ওয়ার্শি ব্রিজ হুমকির মুখে বলে জানা গেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. মনিরুল সাজ রাজন বলেন, চলতি বছরের বন্যায় লৌহজং নদীর ভাঙ্গনে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা, ব্রিজসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তালিকা সংগ্রহসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রকল্প তৈরি করে বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, লৌহজং নদীর ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাট সংলগ্ন ব্লক দিয়ে গাইড বাঁধ নির্মাণসহ নদী খনন কাজ অব্যবহৃত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রকল্প তৈরি করে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজ করা হবে।