ডার্ক মোড
Sunday, 15 June 2025
ePaper   
Logo
বড় গরুর দাম অর্ধেক কমিয়েও মিলছে না ক্রেতা

বড় গরুর দাম অর্ধেক কমিয়েও মিলছে না ক্রেতা

স্টাফ রিপোর্টার 

রাজধানীর পশুর হাটে এবার বড় গরুর চাহিদা একেবারেই তলানিতে। দাম অর্ধেক কমিয়েও ক্রেতা না মেলায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (৬ জুন) সরেজমিনের নতুন বাজার ১০০ ফিট গরুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে আসা ৫ লাখ টাকার ওপরে অধিকাংশ গরুই রয়ে গেছে অবিক্রিত।

এই হাটে শোভা পাচ্ছে ১৫০০ কেজি ওজনের ‘সুলতান’। কেরাণীগঞ্জ থেকে ফ্লেকভিহ জাতের এই গরুটি এনেছেন মুহম্মদ রাজিব।

তিনি বলেন, ‘শুরুতে ১২ লাখ টাকা চেয়েছিলাম, দাম সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এখন দাম কমিয়ে ৮ লাখ বলার পরেও ক্রেতা পাচ্ছি না। শেষদিন সর্বোচ্চ দাম উঠেছে মাত্র ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। এখন কেউ ৬ লাখ টাকা বললেও এই গরু ছেড়ে দিবো।’

‘৬ লাখ টাকায় গরু বিক্রি করলে বড় লোকসান হবে। আমি এই গরু বাছুর অবস্থায় আড়াই লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। প্রায় তিন বছর ধরে গরু লালন পালন করে বড় করেছি। নিজে বাদেও দুইজন লোক রেখেছি গরুর দেখভালের জন্য। প্রতিদিন গরুর খাবারের পেছনেই ১২০০-১৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। এই গরু এখন কয়েক লাখ টাকা লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে চেয়েও ক্রেতা পাচ্ছি না,’ আক্ষেপ করে বলেন রাজিব।

একই হাটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ‘রাজা সুন্দরী’ নামে ১ হাজার কেজি ওজনের গরু এনেছে সোহাগ আলি। বলেন, ‘শুরুতে ১০ লাখ টাকা দাম বলেছিলাম। সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৫ লাখ টাকা। তখন বিক্রি করিনি। এখন কেউ ৪ লাখ টাকা বললেও বিক্রি করে দিবো।’

‘এই গরু নিয়ে আসতে যে খরচ, অবিক্রীত অবস্থায় আবার ফেরত নিয়ে গেলে বড় লোকসান হয়ে যাবে। এখন লাভের চিন্তা বাদ দিয়ে চিন্তা করছি কত কম লোকসানে গরু বিক্রি করা যায়,’ বলেন এ ব্যবসায়ী।

এই গরু বাদেও সোহাগ হাটে দুটি এলবিনো জাতের মহিষ এনেছেন। শুরুতে জোড়া ৮ লাখ বললেও এখন ৪ লাখ বলেও ক্রেতা পাচ্ছেন না।

হাটে নেপালি জাতের তিনটি গরু এনেছেন আরেক ব্যবসায়ী মঈনুল। তিনটি গরুর দাম ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিলেন শুরুতে। এখন তিন লাখ টাকায় প্রতিটি গরু ছাড়ার চিন্তা করলেও পাচ্ছেন না আগ্রহী ক্রেতা।

বড় গরু নিয়ে আফসোস করে গরু ব্যবসায়ী ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর যারা বড় গরু হাটে এনেছেন তাদের থেকে অভাগা কেউ নেই। শখের গরু রীতিমতো অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

নওগাঁ থেকে হাটে এ ব্যবসায়ী এনেছেন ১২০০ কেজি ওজনের ‘কালাচাঁদ’। পাঁচ বছর ধরে এই গরু কোরবানির হাঁটে বিক্রির জন্য উপযুক্ত করেছেন, বুকে আশা নিয়ে এসেছেন ঢাকায়। কিন্তু সব গুঁড়েবালি। শঙ্কা করছেন, অবিক্রিত অবস্থায় গরু নিয়ে ফিরতে হবে তাকে।

বাজারে গরুর পাশাপাশি লাখ টাকা দামের শৌখিন ছাগলের চাহিদাও তলানিতে। নওগাঁ থেকে আরেক ব্যবসায়ী এনেছেন ২ লাখ টাকা মূল্যের ছাগল। শুরুর দিকে ক্রেতারা ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম বললেও ঈদের আগের দিন দাম নেমেছে ৫০-৬০ হাজার টাকায়।

সব মিলিয়ে যারা বড় গরু এনেছেন তাদের শঙ্কা এবার কোরবানির ঈদে তাদের অনেকের গরু বিক্রি পর্যন্ত হবে না। আর গরু বিক্রি হলেও লোকসান হবে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন