ডার্ক মোড
Wednesday, 25 December 2024
ePaper   
Logo
বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পর্যায়ে সাম্প্রতিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা

বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পর্যায়ে সাম্প্রতিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা

বিশেষ প্রতিনিধি

অন্তর্বতী সরকারের আমলে প্রত্যেকটি দপ্তরের সংস্কর করার কথা থাকলেও ন্যূনতম কোন সংস্কার হয়নি বন বিভাগে। বিগত সরকারের বন মন্ত্রীদের সার্বিক দুর্নীতিতে সহযোগিতাকারি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতম কর্মকর্তারা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। তারা হাসিনা সরকারের আশীর্বাদ পুষ্ট ও দুর্নীতির রেকর্ড সৃষ্টিকারী কর্মকর্তাদের পূর্ণবাসন রয়েছে এখনো চলমান। সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টকে ও তারা বাই পাস করে চালিয়ে যাচ্ছে সাবেক প্রক্রিয়ার দুর্নীতি লুটপাট।

গত ৮/১০/২০২৪ তারিখে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা পর্যায়ে ২১ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয় এই বদলির নিয়োগ আদেশ কে কেন্দ্র করে বিসিএস (বন) ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

বিগত হাসিনা সরকারের আশীর্বাদে দুর্নীতিতে রেকর্ড সৃষ্টিকারী কিছু কর্মকর্তাদের পুনরায় লোভনীয় পদে নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ডাম্পিং পোস্টিংয়ে থাকা নিয়োগ বঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এই বদলির নিয়োগের পিছনে কোটি কোটি টাকা ঘুষ বানিজ্যর অভিযোগ তুলেছেন। তারা এই অবৈধ নিয়োগ বদলী আদেশ পুনঃ বিবেচনা করতে উপদেষ্টার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

দুর্নীতির রেকর্ড সৃষ্টিকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভাগীয় মামলা অভিযুক্ত বিতর্কিত ও অকর্মন্য কর্মকর্তা ও রয়েছে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেনকে পদায়ন করা হয়েছে লোভনীয় টাঙ্গাইল বন বিভাগে। যিনি দীর্ঘ ৪ বছর সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগে কর্মরত থেকে বেপরোয়া দুর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকা অবৈধ উপার্জন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সাবেক বন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার কে তিনি ধর্ম মা বলে লুটপাট, দুর্নীতি, বন উজাড় আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগ ঘুষ বাণিজ্য প্রকল্প কাজে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে উপার্জন করেছেন কোটি কোটি টাকা।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দায়িত্বে পাশাপাশি ৪টি প্রকল্প তথা সুন্দরবন ব্যবস্থাপনা সহায়তা প্রকল্প, বাঘ সংরক্ষণে প্রকল্প, সুন্দরবনে টেলিযোগাযোগ পুনঃ স্থাপন না প্রকল্প, শেখ রাসেল ইকো পার্ক প্রকল্প সমূহের প্রকল্প পরিচালকে দায়িত্ব পালনকালে চালিয়েছেন লুটপাট। ভুয়া ভাউচার নিজস্ব লোককে টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে প্রতিটি প্রকল্প যে টাকা ভুয়া ভাউচারে খরচা দেখিয়েছেন তার সিংহভাগই এই কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন।

যা এই প্রকল্পের ৪ টি কার্যক্রমের উপর সরেজমিন অনুসন্ধান চালালে প্রমাণিত হবে বলে দাবি করেন অধঃস্থ কর্মকর্তা কর্মচারী। এরপরেও টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় তার বাড়ি। আবার নিয়োগ পেলেন টাঙ্গাইল বন বিভাগের। অপরদিকে টাংগাইল বন বিভাগের ডিএফও মোঃ সাজ্জাদুজ্জামান নিজেকে শেখ সেলিমের লোক ও গোপালগঞ্জ বাড়ির পরিচয় গত ৩ বছরে টাঙ্গাইল বন বিভাগে চালিয়েছেন লুটপাট। তাকে আবার পদায়ন করা হয়েছে লোভনীয় কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগে। বরিশাল সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. এম এ আওয়ালকে দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ মাত্র ৬ মাস আগে প্রত্যহার করে বন অধিদপ্তরে যুক্ত সংযুক্ত করা হয়। এই আদেশে তাকে লোভ নীয় ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের উপ বন সংরক্ষণ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

নির্মল কুমার পাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা প্রকৃতিক সংরক্ষণ। বিভাগ খুলনা তার বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রকল্প অফিস ভবন নির্মাণ কাজের জন্য ৬ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকার দরপএ গ্রহনের বিষয়ে পতিত দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ব্যাপক দুর্নীতি করেন। যা তদন্ত করার জন্য গত ২৬/০৯/২০২৪ ইং তারিখে মিহির কুমার দে, বন সংরক্ষক খুলনা সার্কেল কে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন প্রধান বন সংরক্ষক। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বন সংরক্ষক তদন্ত কর্মকর্তা মিহির কুমার দে নির্মল কুমার পাল এর দুর্নীতির বিষয় দীর্ঘ দিনেও কোন তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন নি।

নির্মল কুমার পাল তার ভাই যুগ্ন সচিব নিমাই কুমার পাল ও শেখ হেলালের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একই বন বিভাগে অবৈধ ভাবে দীর্ঘ ১১ বছর বহাল তবিয়তে চাকুরী করছেন। বাস্তবে দেখা যায় যে নির্মল কুমার পাল এর দুর্নীতির বিষয় ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাকে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ( সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগে প্রায় ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা নাধীন রয়েছে)। প্রকাশ থাকে যে নির্মল ১টি দরপত্রে অনিয়ম সংগঠিত করছেন তাহলে তিনি ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ কিভাবে বাস্তবায়ন করবেন ।

শারমিন আক্তার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতিসংরক্ষণ বিভাগ ঢাকাতে চাকুরি করার সময় বিতর্কিত সরকারি জায়গা জমি বেহাত করার কার্যক্রম করেন ফলে মন্ত্রণালয় তাকে গত এপ্রিল মাসে অন্যত্র বদলী করেন। প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় শারমিন আক্তারকে ৬ মাস পরে পুনর একই বন বিভাগে বদলি করা হয়েছে। এস এম সাজ্জাদ হোসেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এক বন বিভাগে চাকুরীকালীন সময় বিতর্কিত সরকারি জায়গা জমি বেহাত করার ফলে তাকে এপ্রিল মাসের রাজশাহী স্কুলে বদলি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় ডি এফও সাজ্জাদকে পুনরায় ৬ মাসের মাথায় লোভনীয় রাঙ্গামাটি দক্ষিণ বন বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

উল্লেখ্যযে এই সাজ্জাদ হোসেনকে ২ বছরের ৫ম বারের মত বদলি করা হয়েছে যেমন -সিলেট বন বিভাগ থেকে সামাজিক বন বিভাগ, বাগের হাট, সামাজিক বন বিভাগ বাগের হাট থেকে বন ব্যবহারই বিভাগ চট্টগ্রাম এবং বন ব্যবহারিক বিভাগ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা বন বিভাগ এবং ঢাকা বন বিভাগ থেকে রাজশাহী স্কুলে রহস্যজনক বদলির কারণ কি? কবির হোসেন পাটোয়ারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বর্তমান কর্মস্থল চট্টগ্রাম বন একাডেমি থেকে বদলি করা হয়েছে সামাজিক বন বিভাগ বরিশাল।। কোভিদ হোসেন পাটোয়ারী ডিএফও কে পূর্বে সামাজিক বন বিভাগ পাবনা ও সামাজিক বন বিভাগ ফরিদপুর হইতে বিভিন্ন অপকর্ম, দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। মোস্তাফিজুর রহমান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সংযুক্ত বন সংরক্ষণ কার্যালয়, কেন্দ্রীয় অঞ্চল মহাখালী ঢাকা।

তিনি একজন অকর্মন্য কর্মকর্তা বলে আলোচনায় আছেন তাকে পুরস্কার স্বরূপ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা লামা বন বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য মোস্তাফিজুর রহমান পূর্বে সহকারী বন সংরক্ষক রাঙ্গামাটি দক্ষিণ বন বিভাগ দীর্ঘদিন চাকুরী করা কালীন ভুয়া জোত প্রদানের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ ঘনফুট কাঠ পাচারে সহযোগীতা করে কয়েক কোটি টাকা অবৈধ উপার্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মোঃ মারুফ হোসেন সহকারী বন সংরক্ষক চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সূত্রে আরও জানা যায় যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার ১৩/১৪ টি পদ শূন্য থাকার পরেও পদোন্নতিযোগ্য সহকারী বন সংরক্ষক (ক্যাডারদের) পদোন্নতি দেওয়া হয়নি এবং এ তালিকায় আরো ৫/৬ জন অপেক্ষমান কিছু রহস্যজনক কারণে সিনিয়রদের পদোন্নতি না দিয়ে জুনিয়র এসিএফদের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বানানো হয়েছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন