ডার্ক মোড
Sunday, 29 June 2025
ePaper   
Logo
ফুলবাড়ীতে সেতুর কাজের ধীরগতি চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জনগণ

ফুলবাড়ীতে সেতুর কাজের ধীরগতি চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জনগণ

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি

প্রায় চার বছর অতিবাহিত হলেও শেষ হয়নি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের তালেরতল ছড়ার ওপর নির্মিতব্য সেতুর কাজ। ফলে সেতুর অভাবে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের ছড়া পারাপারে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। ঠিকাদার কেবল সেতুর দুই প্রান্তের দেয়াল নির্মাণ করেছেন, কিন্তু পুরো কাজ এখনো বাকি। 
আমাদের ফুলবাড়ী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মোস্তাফিজার রহমান জাহাঙ্গীরের পাঠানো তথ্য ও ভিডিও চিত্রে বিস্তারিত........... 

স্থানীয়রা বলছেন, দুই প্রান্তের দেয়াল নির্মাণ করতে যদি চার বছর সময় লাগে, তাহলে পুরো সেতু নির্মাণে কত বছর লাগবে? তবে উপজেলা প্রকৌশলী বলছে, সেতুটির নির্মাণকাজ চলছে। আগামী মৌসুমে সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে। স্থানীয় প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের ভাঙ্গামোড় ছড়ার ওপর ৪২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রকৌশল দপ্তর। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৮৪ লাখ ১১হাজার ৪৭ টাকা ১৫ পয়সা। কনস্ট্রাকশন জহুরুল হক দুলাল কুড়িগ্রামের ঠিকাদার এবং দেখভালের দ্বায়িত্বে মো. রনি ২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। চুক্তি অনুযায়ী পরের বছর ১৮ এপ্রিল সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার কথা। তবে চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ।

সেতুর পাশ দিয়েই ড্রামের ভেলায় চড়ে ঝুঁকি নিয়ে ছড়া পারাপার হচ্ছেন নারী-শিশুসহ শতশত মানুষ। এভাবে ভেলায় চড়ে ছড়া পারাপার হতে গিয়ে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। জীবন জীবিকাতেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় হাসেম আলী, এমদাদুল হক ও আনছার আলী জানান, ছড়াটির এপারে তাদের বাড়ি আর ওপারে তাদের সব ফসলি জমি। জমিতে আবাদের প্রয়োজনে বারবার ছড়া পারাপার হতে হয়। ছোট ভেলায় পারাপারে ভোগান্তি তাদের নিত্যসঙ্গী। খেতের ফসল পাকলে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। ছোট্ট একটা ভেলায় করে সবার ফসল বাড়িতে আনার জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যায়।

নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লাগে। তারা আরও জানান, সেতু না থাকায় এ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তারা দ্রুত সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার দাবি জানান। স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আবু তালেব সরকার জানান, সেতুর অভাবে এ অঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ছড়া পারাপারে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিরূপ প্রভাব পড়েছে স্থানীয় মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও কৃষিক্ষেত্রে। জনভোগান্তি নিরসনে সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত

বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, 'সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করা হলেও মানুষের পারাপারের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ড্রামের একটি ভেলা তৈরি করে দেই,কিন্তু সেটিও যথেষ্ট নয়। ফলে স্থানীয়দের ভোগান্তি থেকেই যাচ্ছে।

এ বিষয়ে কনস্ট্রাকশন জহুরুল হক দুলাল কুড়িগ্রামের ঠিকাদার এবং দেখভালের দ্বায়িত্বে থাকা মো. রনির সঙ্গে যোগাযোগ করতে মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, 'আমি প্রায় দুই বছর হলো এ উপজেলায় এসেছি। যোগ দেওযার পর থেকে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ করতে তৎপর আছি। ঠিকাদারও কাজ শেষ করতে যথেষ্ট আগ্রহী। তবে ওখানকার পানির গভীরতার কারণে সেতুর মাঝখানের পিলারের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করি, আগামী শুষ্ক মৌসুমে সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।'

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন